★#ধারাবাহিকপর্বনং২ ★

[بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ]

١. اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْۤ اَنْزَلَ عَلٰى عَبْدِهِ الْكِتٰبَ وَلَمْ يَجْعَلْ لَّهٗ عِوَجًا؄ ؕ

১.#প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তাহার আবদের উপর নাজেল করিয়াছেন কিতাব এবং | তাহার জন্য (অর্থাৎ সেই আবদের জন্য) রাখেন নাই কোনও বক্রতা।।

٢. قَيِّمًا لِّيُنْذِرَ بَاْسًا شَدِيْدًا مِّنْ لَّدُنْهُ وَيُبَشِّرَ الْمُؤْمِنِيْنَ الَّذِيْنَ يَعْمَلُوْنَ الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَهُمْ اَجْرًا حَسَنًا ۙ.

২.(#তাহাকে অথবা ইহাকে) করিয়াছেন দণ্ডায়মান (বা প্রতিষ্ঠিত) তাহা হইতে আগত কঠিন | একটি বিষয়ে সাবধান করিয়া দেওয়ার জন্য এবং সৎআমলকারী মােমিনদিগকে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য যে, তাহাদের জন্য একটি সুন্দর পুরস্কার রহিয়াছে,।।
٣. مّٰكِثِيْنَ فِيْهِ اَبَدًا ۙ.

৩.#যাহাতে তাহারা থাকিবে তাহা একটি (স্থায়ী)জীবনকাল,।।

ব্যাখ্যা ১-৩: আল্লাহর গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশ এই সৃষ্টি। যে মহাবিজ্ঞানময় নিয়মে সৃষ্টি প্রকাশিত হইতেছে তাহা ‘কিতাবে বলেদেয়া আছে। যে মহান আবদগণের উপর কিতাব জ্ঞান নাজিল হয় তাহারা সত্য ও সরল জীবনের অধিকারী হইয়া থাকেন। তাহাদের মন হইতে সকল প্রকার বক্রতার বা ভ্রান্তির অবসান ঘটে।তাহারাই কেবল আল্লাহর প্রশংসা বুঝিতে সক্ষম। তাহারা সৃষ্টিতে সকল প্রকার দাসত্ব হইতে মুক্ত হইয়া আল্লাহর দাসত্বের উপর দৃঢ়ভাবে দণ্ডায়মান হন। তাহারাই লব্ধপ্রতিষ্ঠিত চিরঞ্জীব বস্তু। জগতের সকল সৃষ্টির অধীনতা হইতে মুক্তিপ্রাপ্ত এবং জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত মহান ব্যক্তিত্ব তাহারাই । নবি তেমনই একজন দাস যিনি মানবরূপে আসিয়াছেন লােকদিগকে সজাগ করিয়া তাহাদের জীবনের কঠিন একটি যুদ্ধ বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য যাহাতে বিশ্বাসকারীগণ সাবধানতার সহিত বস্তু-বন্ধনের সকল কলুষ হইতে মুক্ত হইয়া।স্বাধীন সত্তারূপে সুপ্রতিষ্ঠিত হইতে পারেন; এবং সুন্দর পুরস্কারলাভ করিতে পারেন; এবং এমন একটি জীবনকালে পৌছিতে পারেন—যাহা চিরস্থায়ী।

٤. وَّيُنْذِرَ الَّذِيْنَ قَالُوا اتَّخَذَ اللّٰهُ وَلَدًا-

৪.#এবং সাবধান করিবার জন্য তাহাদিগকে, যাহারা বলে : আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করিয়াছেন;।।

٥. مَا لَهُمْ بِهٖ مِنْ عِلْمٍ وَّلَا لِاٰبَآٮِٕهِمْ‌ؕ كَبُرَتْ كَلِمَةً تَخْرُجُ مِنْ اَفْوَاهِهِمْ‌ؕ اِنْ يَّقُوْلُوْنَ اِلَّا كَذِبًا.

৫.#এই বিষয়ে না আছে তাহাদের জন্য কোনও জ্ঞান, না ছিল তাহাদের পিতৃ-পুরুষদিগের জন্য । গুরুতর একটি কথা তাহাদের মুখ হইতে বাহির হয়। তাহারা যাহা বলে ইহা মিথ্যা বৈ নহে।।

ব্যাখ্যা ৪-৫; এবং তাহাদিগকেও সতর্ক করিয়া দেওয়ার জন্য, যাহারা বলে আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করিয়াছেন। তাহাদের এই কথার মধ্যে তাহাদের জন্য জ্ঞানের কিছুই নাই। তাহাদের পূর্ব পুরুষগণের জন্যও ইহাতে জ্ঞানের কিছুই ছিল না।অতএব, তাহাদের এইরূপ বক্তব্য মিথ্যা।।

٦. فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّـفْسَكَ عَلٰٓى اٰثَارِهِمْ اِنْ لَّمْ يُؤْمِنُوْا بِهٰذَا الْحَـدِيْثِ اَسَفًا.

৬.#উহারা এই বিবরণের দ্বারা ইমানের কাজ না করিলে আপনি হয়ত উহার উপর আপনার নফসকে দুঃখহত করিয়া ফেলিবেন।।

٧. اِنَّا جَعَلْنَا مَا عَلَى الْاَرْضِ زِيْنَةً لَّهَا لِنَبْلُوَهُمْ اَ يُّهُمْ اَحْسَنُ عَمَلًا.

৭.#সৃষ্টিতে (বা পৃথিবীতে) যাহা কিছু উহার
ভূষণ স্বরূপ আমরা বানাইয়া দিয়াছি তাহা এই পরীক্ষা করিবার জন্য যে, তাহাদের মধ্যে সুন্দর অমল কাহারা করে।।

٨. وَاِنَّا لَجٰعِلُوْنَ مَا عَلَيْهَا صَعِيْدًا جُرُزًا ؕ.

৮.#এবং নিশ্চয় উহার উপর যাহা কিছু আছে তাহা আমরা উদ্ভিদশূন্য উন্নত মৃত্তিকায় অবশ্য পরিণত করিয়া থাকি।
অথবা-আমরা আহত ( নিঃস্ব) উন্নত মৃত্তিকায় (বা কবরে) অবশ্য পরিণত করিয়া থাকি।।

ব্যাখ্যা ৬-৮: নবি মানুষকে সান্ত্বনা দিয়া বলিতেছেন : আমাদের এইসব বিবরণের দ্বারা মানুষ সুপথ গ্রহণ না করিলে তােমার পবিত্র মন কখনােবা অত্যন্ত দুঃখগ্রস্ত হইয়া পড়ে। এত দুঃখ করিয়া লাভ নাই। বস্তুকে যেভাবে আমরা প্রলােভনমূলক অস্থায়ী সৌন্দর্যদ্বারা পরীক্ষা মূলক ভাবে সাজাইয়া দিয়াছি তাহার কারণে মানুষ যেইরূপ ভাবে অধঃপতিত হয় তাহা দেখিয়া এই মনােকষ্ট তােমাকে এইখানে ভুগিতেই হইবে। সংআমলের পরীক্ষার জন্য এইরূপ আপাত প্রলােভন সৃষ্টি অপরিহার্য ব্যাপার। মানুষ বিশেষভাবে লক্ষ করিয়া দেখুন : পৃথিবী-বক্ষে শস্যাদির শ্যামল সৌন্দর্য, বৃক্ষলতা ইত্যাদি যাহা কিছু সৃষ্ট হইয়া থাকে তাহাকে আমরা মাটির সঙ্গে মিশাইয়া মাটিতে পরিণত করিয়া ফেলি। আজ যাহা শ্যামল সুন্দর শস্যক্ষেত কাল তাহা কর্তিত হইয়া পুনরায় উদ্ভিদশূন্য হইয়া যায়।।

উদাহরণ স্বরূপ গৃহীত কোনও একটি পৌরাণিক কাহিনীর উপর ঐতিহাসিক এবং ভৌগােলিক গুরুত্ব অধিক আরােপ না করাই উচিৎ। ইহার কারণ শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক অর্থ এবং উহার শিক্ষার দিকেই কোরআন অধিক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দান করিয়া থাকেন। ইহা ছাড়া কোরআনের শানে নজুল অধিকাংশ ক্ষেত্রে মিথ্যা কাহিনী দ্বারা উদ্দেশ্য মূলকভাবে রচিত হইয়াছে। অতএব, স্থান, কাল এবং ব্যক্তি বিষয়ক মতভেদ লইয়া বিরােধের তুফান সৃষ্টি করিবার বাড়াবাড়ি একেবারেই অবান্তর।।

٩. اَمْ حَسِبْتَ اَنَّ اَصْحٰبَ الْـكَهْفِ وَالرَّقِيْمِۙ كَانُوْا مِنْ اٰيٰتِنَا عَجَبًا.

৯. তুমি কি মনে কর যে, শুহাবাসীগণ এবং খােদিত লিপি ছিল আমাদের পরিচয় হইতেও বিস্ময়কর। (অথবা আমাদের নিদর্শনাদির মধ্যে বিস্ময়কর ?)।।

ব্যাখ্যা ৯: আল্লাহর পরিচয়ের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বিস্ময়কর পরিচয় হইল তাহার বৈচিত্র্যময় সৃষ্টি । তাঁহারা এমন সব বৈচিত্র্যময় ও কার্যক্রমের অধিকারী যাহা সাধারণ মানুষ ধারণাও করিতে পারে না।কাহাফবাসীদের বিষয়াদি এবং তাহাদের সম্বন্ধে ফলকে খােদিত লিপি দুনিয়াবাসীর জন্য অবশ্য আজব কথা, কারণ তাহাদের ঘটনাগুলিও রহস্য ঘেরা। তথাপি কাহাফে প্রবেশ বিষয়টি মুমিনের জন্য রহস্যজগতের প্রথম পদক্ষেপ মাত্র। পরিণামে কাহাফবাসীগণ আল্লাহর উচ্চতম বৈচিত্রের পরিচয়ের মধ্যেই সৃষ্টির সর্বাধিক রহস্যজনক নিদর্শনের পরিচয়লাভ করিবার সামর্থ্য ও সৌভাগ্য অর্জন করিতে সমর্থ হন।।

١٠. اِذْ اَوَى الْفِتْيَةُ اِلَى الْـكَهْفِ فَقَالُوْا رَبَّنَاۤ اٰتِنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةً وَّهَيِّئْ لَـنَا مِنْ اَمْرِنَا رَشَدًا.

১০.#যখন যুবকগণ কাহাফের দিকে স্থান গ্রহণ করিলেন, অতএব তাহারা বলিলেন, “হে আমাদের রব, আপনা হইতে আমাদিগকে রহমত দান করুন এবং আমাদের জন্য জীবন্ত করিয়া তুলুন আমাদের সুপথে চালিত কর্মসমূহকে।”

١١. فَضَرَبْنَا عَلٰٓى اٰذَانِهِمْ فِى الْـكَهْفِ سِنِيْنَ عَدَدًا ۙ.

১১.#সুতরাং আমরা তাহাদের কানের উপর আঘাত হানিয়াছিলাম আল কাহাফের মধ্যে বর্ষ কতক।।

ব্যাখ্যা ১০-১১: আল্লাহর দ্বীন ও দুনিয়া (তথা দুনিয়ার জীবন ও আখেরাতের জীবন) এই দুইয়ের মধ্যে রহিয়াছে একটি শক্ত আবরণ। এই আবরণ ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশলাভ করা যায় না। উচ্চতম পরিষদের কাহারও আঘাত ব্যতীত এই আবরণ ছিন্ন হয় না। মৃত্যু ঘটনা আল্লাহর সৃষ্ট একটি আঘাত—ইহাদ্বারা দুনিয়ারূপ এই পর্দা ছিন্ন হয়, কিন্তু জীবদ্দশায় যাহাদের এই পর্দা আঘাত খাইয়া ছিন্ন হইয়া যায় তাহারা অতীব ভাগ্যবান। তাহারাই সৃষ্টির মধ্যে মহাপুরুষ এবং জ্ঞানী। এই কাহাফবাসীগণ তাহাদেরই

অন্যতম।।

যতক্ষণ মানুষের মনে দুনিয়ার আশা-ভরসা একটুও বাকী থাকে ততক্ষণ দুনিয়া হইতে ছুটিয়া আল্লাহতে পূর্ণ আত্মসমর্পণ করা হয় না। বিপদ বিশ্বাসীর পরীক্ষা। সাধারণতঃ ঘাের বিপদের দ্বারা দুনিয়া হইতে একেবারে হতাশ হইয়া গেলে বিশ্বাসী মানুষ আপন রবের নিকট পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ করিয়া থাকেন। উক্ত কাহাফবাসীগণও এইরূপ পরীক্ষার সম্মুখীন হইয়াছিলেন। এবং তাহারা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন। দুনিয়ার প্রতি এতটুকু আকর্ষণ থাকিলেও জীবদ্দশায় আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশাধিকার তিনি দান করেন না। যখন করেন তখন সবটুকু দুনিয়াই তিনি ছিনাইয়া লন। উল্লিখিত যুবকগণ কাহাফের দিকে তাহাদের অবস্থান গ্রহণ করিলেন। অর্থাৎ মনােবল ও আমলের এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করিলেন যাহা কাহাফে প্রবেশের প্রস্তুতিপর্ব হিসাবে উপযুক্ত বলিয়া বিবেচিত হইতে পারে। তারপর আল্লাহর রহমতলাভের প্রার্থনা করিলেন।।

মনের মধ্যে চির যৌবনশক্তি গ্রহণ করা ব্যতীত কেহই আল কাহাফে প্রবেশ করিতে পারেন না, এইজন্য ১৩ সংখ্যক বাক্যে বলা হইয়াছে, “নিশ্চয় তাহারা ছিল যুবক বয়সের দিক হইতে নহে, মনের দিক হইতে। বয়সের দিক হইতে তাহারা সবাই যুবক হইবেন এইকথা বলাই চলে না। কারণ সাতজন ধর্মপ্রাণ লােকের মধ্যে সকলেই কেন যুবক হইবেন? আমরা দেখিতে পাই, প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ লােকদের মধ্যেই ধর্মভাব অধিকতর প্রবল হইয়া থাকে। অথচ নিশ্চয় করিয়া তাহাদের যুবক হওয়ার কথা কোরআনে ঘােষণা করিতেছেন, কারণ মনের যুবত্বশক্তি উজ্জীবিত করিয়া তুলিবার একান্ত প্রয়ােজন রহিয়াছে,নতুবা তাহাদের

বয়সের উল্লেখ করিবার মত বাজে কথা এবং তাহা জোৱ দিয়া বলিবার নজির কোরআনে কোথাও নাই।হযরত মূসার দুই সমুদ্রের মিলন ক্ষেত্রের দিকে যাত্রাকালেও সঙ্গে ছিল একটি যুবক’ (১৮:৬০)।।

আল কাহাফ যদি পর্বত গুহাই হইত তাহা হইলে যে কেহ উহাতে প্রবেশ করিতে পারে-যুবশক্তি কোনও প্রয়ােজন হয় না। ইহা ছাড়া যুবকগণ আল কাহাফের দিকে অবস্থান গ্রহণ করিল’-এইকথা না বলিয়া বরং সেইক্ষেত্রে আল কাহাফের মধ্যে প্রবেশ করিল” বলা হইত। যাহা হউক, আল কাহাফের পথে যাত্রা শুরু করিবার পর উল্লিখিত যুবকগণ আল্লাহর প্রত্যক্ষ দয়া ভিক্ষা করিতে লাগিলেন। আল্লাহর যে সকল দয়া আমরা সকলেই গ্রহণ করিতেছি তাহা তাহার পরােক্ষ দয়া’, কারণ ইহা সকলের জন্য প্রাপ্য হিসাবে দুনিয়ায় রাখা হইয়াছে। তাহার নিজ হইতে দয়া’-এই নয় অন্যরূপ। এইরূপ দয়া তিনি প্রত্যক্ষভাবে নিজে তাহার প্রতিনিধি মারফত দান করিয়া থাকেন এবং এই দয়া দুনিয়ায় দান করা হয় না। ইহা একমাত্র আল্লাহর দ্বীনে লইয়া যাইয়া সেইখানে দান করা হইয়া থাকে।আমরা দুনিয়াবাসী যে সকল সৎকর্ম ও আদেশ করিয়া থাকি তাহা ক্ষণস্থায়ী ও মৃত। চিরস্থায়ী এবং জীবনের রাজ্যে যিনি প্রবেশ করিয়াছেন তাহার কর্ম ও আদেশগুলি জীবন্ত। সেইখানে যে আদেশ তিনি করিবেন তাহাই কার্যকরী হইবে। মৃত ও অর্থহীন কর্ম এবং আদেশ সেইখানে নাই।অমৃতের দেশে প্রবেশের জন্য তাহাদের ঐকান্তিক প্রার্থনার ফলে আল্লাহ তাহাদের প্রার্থনা মধুর করিলেন। সুতরাং, তাহাদের কানে মারিলেন আঘাত এবং গ্রহণ করিলেন কাহাফে। ফলতঃ পার্থিব সত্ৰব অর্থাৎ দুনিয়া হইতে কান তথা সমগ্র চিত্তবৃত্তি বিচ্ছিন্ন হইয়া গেল। তাহারা আশ্রয়লাভ করিলেন আল্লাহর দ্বীনে,

আল্লাহর রহস্যলােকে।।

আল কাহফের দিকে যাইয়া তাহাদের রবের রহমত স্বরূপ উহাতে প্রবেশ লাভের প্রার্থনা জানাইলেন। আল্লাহর রহমত কখনও দুনিয়ায় থাকে না, কারণ রহমত স্থায়ী দয়া। প্রার্থনার ফলশ্রুতি হিসাবে তাহাদের কানের উপরে তথা বৃত্তিসমূহের উপরে রহমতের আঘাত হানা হইল। আঘাত হানির সঙ্গে সঙ্গে ইলাল কাহাফ আর রহিল না। তাহা হইয়া গেল ফিল কাহাফ’। অর্থাৎ কাহাফের দিকে আর রহিলেন না বরং কাহাফের মধ্যে প্রবিষ্ট হইয়া গেলেন। ইলা’ হইয়া গেল ফি”। রব যদি কাহারও সঙ্গে শব্দ করিয়াও কথা বলেন তাহা হইলে সেই শব্দ যাহাকে বলিবেন তিনিই শুনিবেন। অন্যলােক সঙ্গে থাকিলেও তাহার কিছুই শুনিতে পারিবেন না, কারণ তাহাদের মধ্যে এবং আধ্যাত্মিক জগতের মধ্যে দুনিয়া নামক একটি সূক্ষ্ম ও শক্ত পর্দা রহিয়াছে। এইজন্য তাহারা উহা শুনিবে না। কানে আঘাত” একটি রূপক কথা। কানে প্রবল আঘাত করিলে আমাদের কানে তালা লাগিয়া যায় এবং কিছুক্ষণ কিছুই শােনা যায় না।আল্লাহর সেইরূপ অলৌকিক আঘাত খাইয়া কান হইতে দুনিয়া ছুটিয়া গিয়াছে, দুনিয়ার কোনও শব্দ বা কথা তাহাদের কানে আর প্রবেশ করিবে না। কান এখন ‘আল্লাহর দ্বীন’—এই রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত হইয়াছে। কাহাফবাসীর এই আঘাত অল্পক্ষণের ছিল না। তিনশত বৎসর কাল পরিব্যাপ্ত ছিল এই আঘাত।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *