(Five prayers/namáz/nemö)
প্রায়শই প্রশ্ন করা হয়, ‘আস-সালাত’ অর্থ ‘নামায’ না-হলে, ‘নামায’ এলো কোথা থেকে? আবার, নামায যদি জরথুস্ট্র ধর্মের প্রার্থনা হয়, তার প্রমাণ কি। পাশাপাশি, মোহাম্মাদ রসুলুল্লাহর যদি ‘মিরাজ’ না হয়, তাহলে মিরাজ এলো কোথা থেকে?
এই প্রবন্ধে সংক্ষেপে যথাযথ রেফারেন্স-সহ ‘নামায’ ও ‘মিরাজের’ উৎস দেখিয়ে দেওয়া হলো। সত্যাগ্রহীরা আনন্দের সঙ্গে পড়তে পারেন। উপরন্তু, এই ধর্ম থেকেই এসেছে ‘ফেরেশতা’ ধারণাটি। অবশ্যই আল-কুর’আনে ‘মালাইকা’ অর্থ আগুনখোরদের ‘ফেরেশতা’ কিংবা খ্রিস্টানদের ‘অ্যাঞ্জেল’ নয়।
১. নামায
সংক্ষিপ্ত আকারে নামাজের মূল ইতিহাস তুলে ধরা হলো। বিভিন্ন বক্তব্যে ‘অফিসিয়াল লিংক’ সংযুক্ত করা হয়েছে। চুম্বক অংশগুলো বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। এখান থেকে জানতে পারবেন, (১) ৫ ওয়াক্ত নামায কারা পড়ছে, কীভাবে পড়ছে এবং (২) কীভাবে সূর্যের উদয়-অস্ত অনুসরণ করে ৫ ওয়াক্ত নামায পড়া হয়।
‘নামায’ (namáz/ نماز) শব্দটি আরবি ভাষার কোনো শব্দ নয়। ভাষাতাত্বিকগণ শব্দের মধ্যে প্রাচীন ইতিহাসের ছাপ দেখতে পান। যেভাবে, চর্যাপদের প্রাচীন ভাষার সূত্র ধরে বর্তমান বাংলা ভাষা, অহমিয়া বাংলা, উড়িয়া বাংলা ভাষার পূর্বপুরুষ নির্ণয় করা যায়।
মূলত তিন হাজার বছরের প্রাচীন এই জরাথুস্ত্রবাদ পৃথিবীর প্রাচীন ধর্মগুলোর একটি। তাদের সবচে বড় দেবতা ‘আহুরা মাজদার’ নাম অনুসারে এর অন্য নাম মাজদাইজম। (পড়ুন) এনসাইক্লোপিডিয়া অব রিলিজিয়ন বলছে- ‘জরাথুস্ত্রবাদের শেকড় পূর্ব ইরানের গ্রাম্য সংস্কৃতিতে প্রোথিত। ধর্মটি খ্রিস্টের জন্মের ১০০০ বছর আগে উৎপত্তি লাভ করে এবং পারসিক সাম্রাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ’ (খণ্ড- ১৫, পৃষ্ঠা- ৫৮০)
From Middle Persian (OSGDE /namāz/, “reverence, prostration, prayer”) / नमस् (namas)
পরবর্তীতে অগ্নি-উপাসকদের সেই শব্দ গ্রহণ করে মুসলিমদের প্রার্থনা পদ্ধতি ঢেলে সাজানো হয় এবং দুনিয়া-জুড়ে হাদিসের নামে চালু করা হয়। যদিও হাদিসের পণ্ডিতগণও হাদিস থেকে প্রচলিত ২ রাকাত নামাযের পদ্ধতি দেখাতে পারেন নি আজ পর্যন্ত!
কেউ কেউ বলেন, এমনও হতে পারে- মুসলিমদের অনুকরণেই অগ্নিউপাসকরা নামায চালু করতে পারে। এটা গায়ের জোরে বলা অযৌক্তিক কথা মাত্র। আল-কুর’আনে মাজুসদের (২২:১৭) কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর একটাই কারণ, মহাগ্রন্থ আল-কুর’আন নাযিলের আগে থেকেই মাজুসরা/আগুন-উপাসকরা ছিল। তাদের ধর্মগ্রন্থ আভেস্তা বা জেন্দাবেস্তা-তে পাওয়া যায় ৫ ওয়াক্ত নামায-সহ তাদের অন্যান্য কর্মকাণ্ড। সূর্য ও আগুন উপাসনার পদ্ধতি ‘নামাজ’ তাদেরই ভাষার শব্দ। এটা এখনও আরবি কোনো শব্দ নয়।
কিছু রেফারেন্স:
http://www.avesta.org/other/Zoroastrianism_in_Other_Faiths_Final.pdf
এখানে একটি বই আছে। এর ১০৭নং পৃষ্ঠায় জরথুস্ট্র ধর্ম থেকে “প্রচলিত ইসলাম ধর্মের” বিষয়ে ভারতীয় পণ্ডিত-গবেষকের লেখাটি পড়তে পারেন। গবেষক Rohinton F. Nariman এর বক্তব্যের সংক্ষিপ্তসার হলো- “সম্ভবত জরথুস্ট্র মহান স্রষ্টার প্রাচীন এক নবী ও রসুল। তার পরও পারিসিয়ানরা তার বার্তাকে বিকৃত করে এবং আগুন-পূজা, সূর্য-পূজা ইত্যাদি তৈরি করে।
তিনি বলেন, ইসলাম পারস্য ধর্ম সম্পর্কে তেমন কিছু বলে না, যদিও প্রথম দিকের আরবরা তিনটি বিরাট সাম্রাজ্য ধ্বংস করেছিল। যেমন ৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে কাদিসিয়াহ (Qadissiyah), ৬৪১ খ্রিস্টাব্দে নাহাভান্দের (Nahavand) ও সাসানিয়ান সাম্রাজ্য (Sasanian Empire)।
কুরআন শুধুমাত্র একটি আয়াতে ম্যাজিয়ন ধর্ম বা আগুন উপাসকদের নির্দেশ করা হয়েছে। (দেখুন সুরা হজ্জ:১৭)
তাদের তথ্য মতে রাসুল পরবর্তী ইসলামের অনুসারীগণ কুরআনের ২২:১৭ নং আয়াতের কারণে আরব অঞ্চলে জরথুস্ট্রবাদকে সহ্য করেছিলেন। যাই হোক, আব্বাসীয় খিলাফত দৃশ্যপটে প্রবেশ করার পর, জরথুস্ট্রিয়ানরা নির্যাতিত হতে শুরু করে- সম্ভাব্য কারণ তারা অগ্নি উপাসক এবং তাই, তাদেরকে মূর্তিপূজারী হিসাবে (ঘৃণ্য চোখে) দেখা হয়েছিল। কুরআনের আয়াতটির ব্যাখ্যা এমন হতে পারে যে– নবী জরথুস্ত্র একজন ঈশ্বরের বার্তাবাহক হলেও এবং তাঁর বাণী পারস্যের জনগণের মধ্যে বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও, বাস্তবে সেই বাণীর বিকৃতি- তাদেরকে অগ্নি উপাসক করে তোলে। যা নবী জারথুস্ত্রের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
— (Le Muséon, page 153) পিডিএফ বই, পৃষ্ঠা: ১০৭,১০৮
১৯০২ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লুই এইচ গ্রে ‘ইসলামের উপর জরথুষ্ট্রবাদের প্রভাব’ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এর নাম “Zoroastrian Elements in Muhammedan Eschatology.”
তিনি বলেন: তার আরব বিজয়ীদের উপর পারস্যের প্রভাব ছিল গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী। আরব সাহিত্যে বিশেষ করে ইরানি চিন্তাধারার প্রবাহ প্রকাশ পায়, এবং ধর্মতত্ত্বের অধিকাংশই পার্সিয়ান উপাদান দ্বিয়ে তৈরি করা হয় (Brockelmann, Gesch. der arab. Lit., i. 71- 72)। এমনকি ৬৪২ সালে সাসানিদের শেষ ইয়েজদেগার্ড তৃতীয়-এর পরাজয়ের আগেও, নানা প্রথার উদ্ভাবন শুরু হয়েছিল; কারণ মুহাম্মদ নিজে সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে, জরথুস্ট্র ধর্মের কিছু বৈশিষ্ট্য, সন্দেহাতীতভাবে আরবদের মধ্যে যা বিদ্যমান ছিল, তা ইসলামের শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। — (লে মিউজন, পৃষ্ঠা ১৫৩)
তবে, বাস্তবতা হলো, কুরআন থেকে আমরা জানতে পারি, রসুলুল্লাহ অবশ্যই সেসময়ের প্রভাবশালী পারসিয়ান সাম্রাজ্যের মাজুসদের (অগ্নি-উপাসক) থেকে কোনো কিছুই গ্রহণ করেন নি। আল-কুর’আনে বরং নবীকে সতর্ক করে বলা হয়েছে-
তুমি যদি শরিক কর, তাহলে তোমার কর্ম অবশ্য অবশ্যই নিষ্ফল হয়ে যাবে, আর তুমি অবশ্য অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। {৩৯:৬৫}
if you should associate [anything] with Allah, your work would surely become worthless, and you would surely be among the losers.
এই সতর্কতা রাসুলের পূর্বে অন্যান্য নবী-রসুলগণের প্রতিও করা হয়েছিল।
এ হলো আল্লাহর হিদায়াত, তিনি তাঁর বান্দাদের যাকে চান এর ভিত্তিতে পরিচালিত করেন। তারা যদি শিরক করতো, অবশ্যই নিষ্ফল হয়ে যেতো তাদের সব আমল। এরা ছিলো সেইসব লোক, যাদেরকে আমরা দিয়েছিলাম কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুয়্যত। {৬:৮৮,৮৯}
যাই হোক, এখানে দেখুন, জরথুস্ট্র ধর্মের ৫ ওয়াক্ত নামাযের দিক-নির্দেশনা। যা কুর’আন নাযিলের বহু আগে থেকে প্রচলিত আছে। আহুর মাজদা হলো তাদের প্রভু বা খোদা।
https://authenticgathazoroastrianism.org/2010/07/18/the-five-daily-prayersnamaznemo-and-the-month-of-bahman-in-zoroastrianism/
জরোয়াস্ট্রিয়ানদের ৫ ওয়াক্ত নামায পাবেন এখানেও Zoroastrian Daily Prayers : https://www.ahuramazda.com/pages/prayers_nyayesh_.html
এবং এখানে:
https://www.ahuramazda.com/pages/prayers_basic_.html
মুসলিম নামধারী মুশরিক এবং তাদের ধর্মগুরুরা মহান আল্লাহর ৯৯টি নাম পয়দা করেছে।
এটাও যেন আগুন উপাসকদের সঙ্গে মিল রেখে এবং কপি করে। যেমন, আগুন পুজারিদের খোদা আহুর মাজদার আছে ১০১টা নাম। https://www.ahuramazda.com/pages/101_names_of_ahuramazda_.html
এই ধর্মে মৃত্যুর পর “আত্মার যাত্রার” কথা বলা হয়েছে:
আত্মা মৃত্যুর পরে তিন দিন পর্যন্ত দেহের কাছে থাকে, আনন্দে বা বেদনায় তার কাজ অনুসারে। চতুর্থ দিনের ভোরে সেটা তার ভবিষ্যতের বাড়িতে যাত্রা শুরু করে। যদি সেই আত্মা ধার্মিক হয়, তাহলে সেটা “অধিক দক্ষিণ দিকে, ঈশ্বরের দিকে যায়”; সেখানে মিষ্টি সুগন্ধি উপভোগ করে। সেখানে অসামান্য সৌন্দর্যের কুমারী তার সঙ্গে দেখা করে এবং তাকে জানায় যে সে তার ভাল কাজের ফল। —
(লে মুসিওন, পৃষ্ঠা 154-155)]
http://www.avesta.org/other/Zoroastrianism_in_Other_Faiths_Final.pdf পৃষ্ঠা ১১৯,১২০,১২১
প্রচলিত হাদিসের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন? এই সেই বই- যা আগে লেখা হয়েছে, হাদিসের বইয়ে মাত্র কয়েক শতাব্দী আগে তার অনুবাদ ও আল্লাহ ও নবীর নাম দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Rohinton F. Nariman is a judge of the Supreme Court of India. He was ordained a priest at the young age of twelve and is an eminent scholar of Zoroastrianism and comparative religion.
২. মিরাজ
এবার আমরা দেখবো, তথাকথিত মিরাজ বা ঊর্ধ্বাকাশে গমন কাহিনীর সূত্র কোথায়। দাবি অনুযায়ী প্রচলিত ৫ ওয়াক্ত নামায এসেছে ‘মিরাজ’ নামক ঘটনা থেকে। কে, কার ঘটনা চুরি করে মেরে দিল- নিজেই দেখুন।
মাজুসদের প্রাচীন নবী জরুথ্রস্টের বহুকাল পরে একজন উত্তরসূরি ‘আদরা ভিরাফ’। সে ঊর্ধ্বাকাশে গমন করে ! সর্গ ও নরক ঘুরে আসে। এই ব্যাটা ভিরাফের ৭টি বোন ছিল; আর প্রত্যেকেই ছিল তার স্ত্রী!!
http://www.avesta.org/mp/viraf.html
বিশাল এই ধর্মীয় বিষয়টি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন জার্মান অধ্যাপক মার্টিন হগ। Prof. Martin Haug, of the University of Munich, revised from the MS. of a Parsi priest Hoshangji. From The Sacred Books and Early Literature of the East, Volume VII: Ancient Persia, ed. Charles F. Horne, Ph.D., copyright 1917.
সুপ্রাচীন ধর্মের এই লেখায় পাবেন:
১. ভিরাফের ঊর্ধ্বাকাশে গমনের কিচ্ছা।
২. যেখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আত্মার অবস্থা। এখানেই আছে ‘ফেরেশতার’ সঙ্গে আদরা ভিরাফের কথোপকথন।
৩. অধ্যায় ১৬ থেকে শুরু হয় তাদের নেতা ভিরাফের জাহান্নাম যাত্রা।
৪. এখান থেকেই আসতে পারে পুলসিরাত সেতুর ধারণা (Chinwad bridge)।
৫. জাহান্নামে নারী ও পুরুষের ভয়াবহ নির্যাতনের সিহাহ সিত্তার হাদিসগুলো সব এখানে থেকে অনুবাদ ও বর্ধিতকরণ করা হয়েছে বলে সহজেই ধারণা করা যায়।
যেমন: অধ্যায় ২৪:
আমি একজন মহিলার আত্মাও দেখেছি- যার স্তন গেঁথে ফেলা হয়েছিল নরকে; এবং ক্ষতিকারক প্রাণী (খরাফস্টার) তার সমস্ত শরীর খুবলে খাচ্ছিল!
আমি ফেরেশতাকে জিজ্ঞাসা করলাম: ‘এই নারী কি পাপ করেছিল, যার আত্মা এমন শাস্তি ভোগ করে?’
ফেরেশতা বললো, ‘এটি সেই দুষ্ট মহিলার আত্মা- যে পৃথিবীতে, তার নিজের স্বামীকে ছেড়ে দিয়েছিল এবং নিজেকে অন্য পুরুষের কাছে বিলিয়ে দিয়েছিল এবং ব্যভিচার করেছিল।
অধ্যায় ৪৪
আমি এক মহিলা-আত্মা দেখি। যে তার নিজের স্তন দিয়ে পাহাড় খনন করেছিল! আমি জিজ্ঞাসা করলাম: ‘এই দেহের দ্বারা কী পাপ হয়েছিল? যার আত্মা এত কঠিন শাস্তি ভোগ করেছে?’
ধার্মিক ফেরেশতা বলল, এই সেই দুষ্ট মহিলার আত্মা, যে পৃথিবীতে নিজের শিশুকে ধ্বংস করেছিল এবং মৃতদেহ ফেলে দিয়েছিল।’
অধ্যায় ৮৭ [শিশুদের অবহেলা]
তারপর আমি আরেক মহিলার আত্মা দেখি। যে লোহার চিরুনি দিয়ে নিজের শরীর ও মুখ চিরে ফেলছিল, কখনও তার স্তন দুটি দিয়ে লোহার পাহাড় খনন করেছিল! আমি জিজ্ঞাসা করলাম: ‘এই মহিলা কি পাপ করেছিল?’
ধার্মিক ফেরেশতা বলে, এটি সেই দুষ্ট মহিলার আত্মা- যে পৃথিবীতে সম্পদের লোভে শিশুকে দুধ দেয়নি। এখন সে চিৎকার করে বলছে যে- “আমাকে এই পাহাড় খনন করতে দাও, যাতে আমি সেই শিশুটির কাছে যেতে পারি, তাকে দুধ দিতে পারি।” কিন্তু সে কখনও শিশুর কাছে পৌঁছাতে পারবে না।’
এরকম আরও অনেক বক্তব্য।
যেসব নারী নিজেকে সাজায়, চুল সজ্জিত করে দেখায় তাকে কেমন ভয়াবহ শাস্তি দেওয়া হচ্ছে…!
নিজ স্বামী ও মালিকের বিরুদ্ধে গেলে নারীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধরে কীভাবে শাস্তি দেওয়া হবে তার সব কিছু নরক ঘুরে দেখে এসেছে আগুন-উপাসকদের নবী। আর রসিয়ে রসিয়ে চটকদার বর্ণনা দিয়েছে ফেরেশতা!
এখানে বেশিরভাগই হলো নারী এবং নারী-পুরুষের যৌনতা সম্পর্কিত ঘটনার নারকীয় বর্ণনা। এক ঝলক পড়লেই ‘হাদিস-পাঠকরা’ বুঝতে পারবেন ঘটনা। কোথা থেকে এসেছে বুখারি গংদের হাদিসগুলো।
‘সিহাহ সিত্তার হাদিস বইগুলোতে’ জান্নাত জাহান্নামের বর্ণনার হাদিসগুলো মূলত এই মিরাজ সংক্রান্ত কাল্পনিক ঘটনার নামেই বানানো হয়েছে।
হাদিস-পাঠকরা মাত্রই জানেন, বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, আবুদাউদ, নাসাই সহ অন্যান্য হাদিসের বইয়ে জাহান্নাম অধ্যায়ে এ জাতীয় নোংরা ও মনগড়া কথাবার্তায় পূর্ণ হয়ে রয়েছে।
বাস্তবতা হলো, শুধু তথাকথিত মিরাজই নয়, অসংখ্য অশ্লীল হাদিসের কিচ্ছাকাহিনীর উদ্ভব এই অতি প্রাচীন অগ্নি-উপাসক বা মাজুসদের ধর্মগ্রন্থ থেকে। কুরআনের সঙ্গে এসবের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক না থাকলেও স্রেফ আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। তারপর আরব সরকারদের তেল-বেচা টাকার পৃষ্ঠপোষকতায় গোটা দুনিয়ায় ওহাবি, সালাফি, সুন্নি, শিয়া বিভিন্ন ফেরকা তৈরি করে, বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে “সর্বশেষ নতুন ধর্ম ইসলামের” নামে চালিয়ে দেওয়া হয়। আর এই অপকর্মে ব্যবহার করা হয় আল্লাহর নবী ও রসুলদের নাম!ও মুহাম্মদের নাম। জগৎজুড়ে তৈরি করা মাদ্রাসা-মক্তবে এসবই হলো মূল পাঠ্য।
কুরআনের সালাত
আসুন কুর’আনের সালাত (صلاۃ) সম্পর্কে জানি!
‘সালাত’ (صلاۃ) নতুন কোনো আরবি শব্দ নয়। প্রাচীনকাল থেকেই আরব অঞ্চলে সালাত শব্দের ব্যবহার রয়েছে। এখনও রয়েছে। এ যুগে প্রচলিত আরবিতে ‘সালাত’ (صلاۃ) শব্দ দিয়ে কী বোঝানো হয়?
সালাত অর্থ :
১.সংযোগ বা যোগাযোগ,
২.বিধিনিষেধ
৩.বিধান
৪.হুকুম আহকামুল ইত্যাদি।
হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন।
সালাত_(صلاۃ) শব্দ থেকে তৈরি অন্যান্য শব্দ দিয়ে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাবতীয় যোগাযোগ কর্মকাণ্ডকে বোঝায়। যেমন ?
সৌদি আরবসহ অন্যান্য আরব দেশে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলা হয় আল ইত্তি সালাত (الاتصالات)। পাশাপাশি, রাস্তা-ঘাট, পরিবহন, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি যাবতীয় যোগাযোগকে ইত্তি সালাত দিয়েই বোঝানো হয়।
দেখুন, আরবের সরকারি-বেসরকারি খাতের কিছু ‘সালাত (صلاۃ)’ কোম্পানি:
https://www.etisalat.ae/en/
https://www.etisalat.eg/
তেমনি, সড়ক, নৌ পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থা বা ‘মাওয়া সালাত’ (مواصلات) কোম্পানি দেখুন
https://www.mowasalat.com/
https://mwasalat.om/
তাহলে, কুর’আনে সালাত বলতে কি বোঝায়?
আরবি ভাষায় নাযিলকৃত আল-কুর’আনেও সালাত বলতে ‘সংযোগ বা যোগাযোগ’ বোঝানো হয়েছে। তবে, তা একমাত্র আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সংযোগ/ যোগাযোগ।
কীভাবে আল্লাহর সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ/ সংযোগ হবে?
আল-কিতাবের দেখানো পথে আল্লাহর নির্দেশ-হুকুম-গাইড লাইন বাস্তবায়ন করেই মহান রবের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হবে। আর এটাই হলো সালাত প্রতিষ্ঠা বা আকিমুস সালাত। ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক অঙ্গন পর্যন্ত বিশাল পরিসরে বিস্তৃত এই ‘আকিমুস সালাত’ কার্যক্রম।
যেহেতু, মহান রব সব কিছু সৃষ্টি করেছেন আল-হক্ব এর ওপর ভিত্তি করে, সেহেতু যাবতীয় আল-হক্ব (যথার্থতা, সত্যতা, ন্যায্যতা) অনুসরণই হলো রব্বুল আলামিনের সঙ্গে সংযোগ প্রতিষ্ঠার একমাত্র পদ্ধতি।
বাস্তবতা হলো, এ বিষয় বোঝার পরও অনেকে উদাসীন থাকে। তাদেরকে বলা হয়েছে-
সেই সব মুসল্লি বা ঘনিষ্ঠ অনুসরণকারীদের জন্য ধ্বংস। যারা তাদের সালাত-সমূহের ব্যাপারে উদাসীন।(মাঊন ৪,৫)
অর্থাৎ, তারা আল-কিতাবের নির্দেশগুলো অবহেলা করে। এবং
তারা যারা লোক দেখানোর জন্য কাজ করে; এবং ঘরের ছোট খাট জিনিসও দেয় না।(মাঊন ৬,৭)
তারা কোন কাজ লোক দেখানোর জন্য করে? কিছু উদাহরণ: প্রতিদান দিবসে অবিশ্বাসী, এতিম-দুস্থকে গলা ধাক্কা দেয়, অভাবীকে খাবার দেয় না; (মাঊন ১-৩)।
মহান আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম- এ জাতীয় বিভিন্ন কাজ হলো সালাত। আর, যারা ধ্বংস হবে এসব ব্যাপারে তারা উদাসীন
সিজদাহ্
সাজাদা/ সিজদা: কী কেন কীভাবে?
সাজদা- বহুল আলোচিত একটি শব্দ। আরবি এই শব্দটির বাংলা অর্থ কী? কুর’আন অনুসারী এবং প্রচলিত ধর্মের অনুসারীদের কথা থেকে এ বিষয়ে মৌলিক যে পার্থক্য পাওয়া যায় তা হলো- কুর’আন অনুসারীরা বলেন সাজদা বা সিজদা হলো Submission to Allah মহান আল্লাহর হুকুম আহকামকে নিঃসঙ্কোচে মেনে নেওয়া। এর সঙ্গে শারীরিক অঙ্গভঙ্গীর সম্পর্ক নেই।
পাশাপাশি প্রচলিত ধর্মচর্চা-কারীদের মতে সাজদা বা সিজদা হলো- মাটিতে নাক ও কপাল ঠেকিয়ে মহান আল্লাহর তসবিহ করা।
আমরা বোঝার চেষ্টা করব-
১. মৌলিক এই পার্থক্যের ভিত্তি কী?
২. আমাদের যৌক্তিক বোধ কী বলে?
৩. আল-কুর’আন এ বিষয়ে কী বলে?
অবশ্যই, দিনশেষে আল-কিতাবের সিদ্ধান্তই সবার জন্য চূড়ান্ত।
১. মৌলিক এই পার্থক্যের ভিত্তি কী?
কুর’আন অনুসারী: সিজদা কোনও শারীরিক কার্যক্রম নয়। এর ভিত্তি আল-কিতাব বা মহাগ্রন্থ। সাজাদা মানে ‘অবনত চিত্তে আল্লাহর বিধান মেনে নেওয়া’।
প্রচলিত ধর্ম অনুসারী: এর ভিত্তি পূর্বপুরুষদের আচার কার্যক্রম; যা এসেছে ‘শেষ নবীর সুন্নাহ’ থেকে। নবীকে আমরা দেখিনি- তাতে কোনও সমস্যা নেই। আমরা দেখেছি আমাদের বাপ-দাদা এবং সমাজ ও বিশ্বের বেশিরভাগ মুসলিমকে। এটাই হলো ভিত্তি।
২. আমাদের যৌক্তিক বোধ কী বলে?
কুর’আন অনুসারী: যুক্তি বলে- সাজাদার মূল উদ্দেশ্য হলো মেনে নেওয়া বা Submission. কেউ যদি অন্তর থেকে বা হৃদয় দিয়ে আল্লাহকে না-মানে, তাহলে তার শারীরিক কার্যক্রমের (মাটিতে মাথা ঠেকানোর) কোনও মূল্য নেই। যেমন, যে কোনও যুগের মুনাফিক অথবা ছদ্মবেশী মুসলিম। যারা ষড়যন্ত্রের জন্য মুসলিমদের মধ্যে মুসলিম হিসেবে থাকে এবং মুসলমানদের মতো সব কাজই করে। কিন্তু তাদের ‘সিজদা’ কখনওই ‘সিজদা’ হয় না। মন থেকে মেনে নেওয়াই প্রকৃত উদ্দেশ্য; আর এটাই সিজদা।
তাই, সর্বাবস্থায় সাজাদা বা সিজদা মানে- ‘অবনত চিত্তে আল্লাহর কথা মেনে নেওয়া’।
প্রচলিত ধর্ম অনুসারী: শরীর অবনত করে মাটিতে কপাল মাথা ঠেকানোই সিজদা। অবশ্যই অন্তর থেকেও মেনে নিতে হবে। অন্তর থেকে না-মানলে সিজদা হবে না। তাকে মুনাফেকি বা প্রতারণা বলে। তবে, মাটিতে কপাল ঠেকানোর শারীরিক কাজ করতেই হবে।
৩. মহাগ্রন্থ আল-কুর’আন এ বিষয়ে কী বলে?
সাজদা নিয়ে আল-কুর’আনে অসংখ্য আয়াত আছে। কারণ মহান আল্লাহ বার বার তাঁকে মেনে নেওয়ার জন্য মানবজাতিকে আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে মেনে নেওয়া বা সাজদা মানে কী? সেটাও তিনি ব্যাখ্যা করেছেন- উদাহরণ ও উপমা দিয়ে বলেছেন। চলুন প্রলিত অনুবাদ থেকেই তা দেখি ও বোঝার চেষ্টা করি।
১৩:১৫ মহাকাশ ও পৃথিবীতে যারাই আছে, সবাই ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায়, আল্লাহকে সাজদা (ইয়াসজুদু) করে এবং তাদের ছায়াগুলোও তাঁকে সাজদা করে সকালে ও বিকেলে।
১৬:৪৮ তারা কি দেখে না– আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন সেগুলোর ছায়া ডানে ও বামে ঢলে পড়ে আল্লাহর প্রতি সাজদাবনত হয়?
২২:১৮ তুমি কি দেখছো না– আল্লাহকে সাজদা করছে সবাই, যারা মহাকাশ ও পৃথিবীতে, সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্ররাজি, পাহাড় পর্বত, বৃক্ষলতা, জীব-জন্তু; এ ছাড়া মানুষের মধ্যেও অনেকেই…
এখানে ১৩:১৫ আয়াতে অনিচ্ছায় সাজাদা করার কথা বলা হয়েছে। সেটা কীভাবে? তা নিচে উল্লেখ করা হলো। পাশাপাশি সূর্য, চাঁদের সাজাদা কী? আল্লাহ বলছেন- আমরা তা দেখতে পাই। অর্থাৎ চাঁদ-সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্রের যে বিষয়গুলো আমরা দেখতে পাই সেগুলোই হলো সাজাদা বা সিজদার পদ্ধতি।
আমরা কী দেখতে পাই? তারও জবাব আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন!
৭:৫৪ সূর্য, চাঁদ ও তারকারাজি তাঁরই নির্দেশের অধীন। সাবধান, সৃষ্টিও তাঁর, নির্দেশও তাঁর।
১৪:৩৩ তিনি তোমাদেরই কল্যাণে নিয়োজিত করে দিয়েছেন সূর্য ও চাঁদকে; তারা অবিরাম একই নিয়ম মেনে চলে; তিনি তোমাদের কল্যাণে আরো নিয়োজিত করেছেন রাত ও দিনকে।
৩৯:৫ তিনি সূর্য ও চাঁদকে নিয়মের অধীন করেছেন;এরা প্রত্যেকেই ভ্রমণ করে একটি নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত।
৫৫:৫ সূর্য আর চাঁদ হিসাব মতো চলে।
অর্থাৎ আল্লাহর নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি বস্তুর স্বাভাবিক কার্যক্রমই হলো তার ‘নিয়ম মেনে চলা বা সাজাদা’।
পাশাপাশি, ১৬:৪৮ ও ২২:১৮ নং আয়াতে বস্তুর ছায়া এবং আল্লাহর অনুগতরা “মহাকাশে ও পৃথিবীতে সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্ররাজি, পাহাড় পর্বত, বৃক্ষলতা, জীব-জন্তু; এ ছাড়া মানুষের মধ্যেও অনেকেই..” আল্লাহর নিয়ম সচেতনভাবে মেনে চলছে বা সাজাদা করছে। আর আমরা এই নিয়ম অনুসরণ দেখতে পাচ্ছি। এটাই আল্লাহ চোখে আঙ্গুল দিয়ে বলেছেন “তারা কি দেখে না, তুমি কি দেখছো না ”। অর্থাৎ আপনি ও আমি তা দেখতে পাচ্ছি।
এবার আমরা দেখি- ১৩:১৫ আয়াতে অনিচ্ছায় সাজাদা করার কথা বলা হয়েছে। কে বা কারা অনিচ্ছায় সাজাদা করে। মহান রব একটি শব্দও বিনা-কারণে উল্লেখ করেন নি। তিনি বলছেন-
১৩:১৫ মহাকাশ ও পৃথিবীতে যারাই আছে, সবাই ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায়, আল্লাহকে সাজদা (ইয়াসজুদু) করে এবং তাদের ছায়াগুলোও তাঁকে সাজদা করে সকালে ও বিকেলে।
এই মহাবিশ্বে দুই ধরণের প্রাণী আছে যারা কিছুটা স্বাধীন। তারা মানুষ ও জিন।সবকিছুই আল্লাহর নিয়ম মেনে চলে। কিন্তু মানুষ ও জিন কিছুটা অবাধ্য হবার স্বাধীনতা ভোগ করে। যারা অবাধ্য হয়- তারা কি কোনও কিছু সাজাদা করে? অথবা, তারা কি অনিচ্ছায় হলেও কোনও কিছু মেনে নেয়? চিন্তা করুন।
হ্যাঁ, অনিচ্ছায় হলেও অবাধ্য মানুষ (ও জিন) আল্লাহর নিয়ম মেনে নেয় বা সাজাদা করে।
কীভাবে?
মানুষের অবাধ্য হবার শক্তি কে দিয়েছে? কোথা থেকে এসেছে? যেই মগজ খাটিয়ে, যেই হাত-পা-মুখ দিয়ে অপকর্ম করা হয়- সেগুলো কে দিয়েছে? মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অপকর্ম করার স্বাধীনতা ও সীমা কে বেঁধে দিয়েছে?
সবগুলোর উত্তর আল্লাহ দিয়েছেন। অপকর্ম করতে চাইলে তার লিমিট বা সীমা তিনিই বেঁধে দিয়েছেন। অপকর্ম করা মানুষটি তার সব কিছুকে আল্লাহর বেঁধে দেওয়া নিয়ম দিয়েই ব্যবহার করে অর্থাৎ সাজাদা করে বা মেনে নেয়। কিন্তু, তা আল্লাহর নির্দেশিত পথে বা পদ্ধতিতে ব্যবহার না করায় সাজাদা করেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়ে যায়। এজন্যই আল্লাহ বলছেন : “সবাই ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায়, আল্লাহকে সাজদা (ইয়াসজুদু) করে”
আপনার হাতের ক্ষমতা, চোখের ক্ষমতা, মন-মগজের ক্ষমতা—সবই মহান আল্লাহর দেওয়া। তাঁর দেওয়া শক্তিগুলো ব্যবহার করেই তাঁর অবাধ্যতা করা হয়। যখনই তাঁর দেওয়া নেয়ামত গুলো নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়- তখনই ‘সাজাদা হয়’– কিন্তু ভালো বা মন্দ কাজে ব্যবহারের স্বাধীন সিদ্ধান্ত মানুষই (নফস) নেয়। তাই মানুষকেই বা নফসকেই পুরষ্কার বা শাস্তি দেওয়া হবে।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
আল্লাহ সুস্পষ্ট করে উদাহরণ দিয়ে বলছেন-
৪১:৩৭ তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে রাত, দিন এবং সূর্য ও চাঁদ; তোমরা সূর্যকে সাজদা কোরো না, চাঁদকেও নয়; সাজদা করো আল্লাহকে, যিনি সেসব সৃষ্টি করেছেন- যদি তোমরা সত্যিই তাঁর ইবাদত করো।
২৪:৪১ তুমি কী দেখো না— মহাকাশ ও পৃথিবীতে যারাই আছে তারা সবাই এবং উড়ন্ত পাখিরা তসবিহ করছে আল্লাহর; তারা প্রত্যেকেই জেনেছে তার সালাত ও তসবিহর পদ্ধতি; তারা যা করে আল্লাহ্ তা জানেন।
উক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারবো যে মাটিতে কপাল ঠেকানো সিজদাহ্ নয় কারণ মাটি মাখলুক মাটিতে কপাল ঠেকানো শিরক।