সাধারণসিয়াম (২ঃ১৮০-১৮৪)

স্পেশালসিয়াম (২ঃ১৮৫-১৮৭)

২ঃ১৮০-২ঃ১৯১ পর্যন্ত সঠিক অনুবাদঃ পুরো কনটেক্সট পড়লে সিয়ামের বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

২ঃ১৮০ “তোমাদের জন্য আদেশপত্র জারি হয়েছে যে (কুতিবা) যখন তোমাদের মধ্যে কেউ মৃত্যুর কাছাকাছি পর্যায়ে আসে, তখন সে যেন ভালোভাবে (খাইরান) সম্পদ বন্টনের দলিল (ওয়াসিয়াত) তৈরি করে রেখে যায় তার পিতা-মাতা ও নিকট আত্মীয়ের জন্য ন্যায্য উপায়ে (বিল মারুফি)- ইহা আল্লাহ সচেতন/সংযোগ স্থাপনকারী (মু্ত্তাকি) দের জন্য একটি অবশ্য কর্তব্য।”

২ঃ১৮১ “অতঃপর যে এই সম্পদ বন্টনের দলিল (ওয়াসিয়াত) পরিবর্তন করবে, তা শোনার পরও- সেই পাপের ভাগীদার হবে যে তা পরিবর্তন করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব শোনেন এবং জানেন।”

২ঃ১৮২ “কিন্তু কেউ যদি আশংকা করে যে দলিল লেখক (মুছছি) কোনো ভুল করতে পারে এবং সে যদি দলিল লেখকের ভুল সংশোধন করে ভারসাম্য করে (আসলাহা) দেয় নিজেদের মধ্যে, তাহলে তার কোনো পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং করুণাময়।”

২ঃ১৮৩- “হে যারা ঈমান এনেছো! তোমাদের জন্য সিয়ামের আদেশপত্র জারি (কুতিবা) হয়েছে যেমনটা জারি হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীগণের প্রতি যাতে তোমরা সুরক্ষিত/সংযোগ স্থাপিত/খাঁটি মানুষ (মুত্তাকি) হতে পারো।”

২ঃ১৮৪ “সময় কালের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ যদি ভ্রমণে থাকে অথবা অসুস্হ থাকে তাহলে অন্য সময়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করো। এবং কেউ যদি ফিদয়া/ক্ষতিপূরণ প্রদানের সামর্থ্য রাখে, তাহলে সে একজনকে খাদ্য প্রদান করবে। কেউ যদি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত কিছু করে, তা তার জন্য ভালো। কিন্তু সিয়াম পালন সর্বোত্তম যদি তোমরা জানতে।

এ ধরনের সিয়াম অতীত পূর্বপুরুষদের জন্যও আদেশ হয়েছিল যখন কেউ কোনো পাপ/অপরাধ করে ফেলে। সিয়াম হলো নিজেদের ভুল সংশোধনের একটি উপায় যাতে আমরা মুত্তাকি/খাঁটি মানুষ হতে পারি যা আল্লাহর খলিফা/প্রতিনিধি হবার পূর্বশর্ত।

যেমন ২ঃ১৮৪ এর আগের আয়াত গুলোর প্রসংগে উইল পরিবর্তন এক ধরনের পাপ/অপরাধ। সেকারণে এ পাপ করলে কেউ যেন স্বেচ্ছায় কিছু সময় কালের জন্য সিয়াম পালন করে। যদি কেউ ভ্রমণে থাকে বা অসুস্হ হয়, তাহলেও সে যেন অন্য সময়ে এই সিয়াম পালন করে নেয়।

এই সিয়ামের বদলে বিকল্প হিসাবে আর্থিক ক্ষতিপূরন (ফিদয়া) এর ব্যবস্হাও আল্লাহ রেখেছেন আর তা হলো কোনো গরীবকে খাওয়ানো (২ঃ১৮০-১৮৪)

সিয়ামের পরিবর্তে এধরণের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আছে ৫ঃ৯৫, ৪ঃ৯২ ইত্যাদি আয়াতে বিভিন্ন পাপের জন্য (অন্য মুমিনের সাথে লড়াই করা বা শপথ ভঙ্গ করা ইত্যাদি)।

এখন প্রশ্ন হলো সিয়ামটা আসলে কি এবং কিভাবে সেটা পালন করা যায়?

এর উত্তর আছে ১৯ঃ২৬ এ যেখানে মরিয়মকে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন

“অতঃপর ভক্ষণ করো/গ্রাস করো (কুল) এবং পান করো/আত্মস্হ করো (ওয়া আশরাবু) এবং দৃষ্টি শীতল করো। এবং মানুষের সাথে যদি দেখা হয়, তাহলে বলো আমি আজ আল্লাহর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি সিয়াম পালনের, অতঃপর আজকে আমি কারো সাথে কথা বলবো না।”

অর্থাৎ সিয়ামের সংজ্ঞা হলো “কথা বলা থেকে বিরত থাকা এবং নিজেকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আত্মউপলব্ধি/গবেষণা বা সংশোধন করা।”

প্রশ্ন হলো নিজেকে গুটিয়ে ফেললে বা কারো সাথে কথা না বললে তা আমাদের মুত্তাকি বা খাঁটি মানুষ কিভাবে বানায়? উত্তর হলো এটি আমাদের সময় ও সুযোগ দেয় যে পাপ করেছি সেটা নিয়ে আত্মসমালোচনা করে পরিশুদ্ধ হবার। সিয়ামটা মুমিনদের জন্য জারি হয়েছে (২ঃ১৮৩)। একজন মুমিনের দায়িত্ব হলো তা সৎভাবে এবং যথাযথভাবে পূর্ণ করা। এ ধরনের সিয়াম পালনের সময় কারো সাথে দিনে রাতে কখনোই কথা বলা যাবে না।

এবার আমরা পরের আয়াতগুলো দেখবো যেখানে একটু “ভিন্ন রকম সিয়ামের” দেখা পাই।

২ঃ১৮৫ “ সুপরিচিত তীব্র উত্তপ্ত সময়ে (শাহরু রামাদান) কুরআন প্রচারের আদেশ হয়েছিল (উনজিলা) যা সমগ্র মানবজাতির জন্য পথপ্রদর্শক (হুদা) এবং সুস্পষ্ট প্রমান (বাইতুনাতিন) পথ প্রদর্শন হতে (মিন আল হুদা) এবং সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী (আল ফুরকান)। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারাই এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী (ফামান শাহিদা মিনকুম) সে যেন এই সময়ে সিয়াম পালন করে (ফালিয়াসমুহু) এবং কেউ যদি অসুস্থ অথবা ভ্রমণে থাকে সে যেন অন্য সময়কাল হতে (মিন আয়ামিন উখারা) প্রস্তুতি গ্রহণ করে (ফা ইদ্দাতুন)। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান এবং কঠিন করতে চান না, যাতে তোমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারো (আল ইদ্দাতা) এবং যাতে তোমরা আল্লাহ মহত্ত্ব বিস্তৃত করতে পারো (তুকাব্বিরু) যে কারণে তিনি তোমাদের পথ দেখিয়েছেন এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ থাকো।

২ঃ১৮৬ “ এবং আমার বান্দারা যখন তোমাকে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, আমি তো নিকটেই আছি। আমি তাদের আহ্বানে (দুআ) সাড়া দেই যখন তারা আমাকে ডাকে। কাজেই তারা যেন আমার প্রতি সাড়া দেয় এবং বিশ্বাস স্থাপন করে যেন আমি তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দেখাতে পারি (ইয়ারশুদুনা)।

এর পরের আয়াতে এই “ভিন্ন সিয়ামের” বৈশিষ্ট্য পাওয়া যাবে।

২ঃ১৮৭ “তোমাদের জন্য সিয়ামের রাতে (সিয়াম আল লাইল) আলোচনা শুরু করার/কথা বলার অনুমতি (রাফাছা) দেওয়া হলো তোমাদেশ উপরে নির্ভরশীল (নিসাইকুম) দের সাথে। তারা তোমাদের আবরণ (লিবাসুন) এবং তোমরাও তাদের আবরণ। আল্লাহ জানেন যে তোমরা অতীতে আত্মপ্রতারণা করতে তবুও তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং ক্ষমা করেছেন। কাজেই এখন তোমরা তাদেরকে/নিসাদের সুসংবাদ দাও (বাশিরুহুন্না) এবং আল্লাহ যা আদেশপত্র (কাতাবা) জারি করেছেন তা অনুসন্ধান করো (ইবতাগু) এবং তা ভক্ষণ করো/গ্রাস করো (কুলু) এবং আত্মস্হ করো (আশরাবু) যতক্ষণ পর্যন্ত আলোর রেখা সুস্পষ্ট না হয় মন্দতা/পাপাচারের অন্ধকার রেখা থেকে (মিন আল ফাজরি)। অতএব সিয়াম সম্পূর্ণ করো রাত পর্যন্ত (ইলা আল লাইলি)। এবং তাদেরকে সুসংবাদ দিও না যতক্ষণ তুমি সংলগ্ন/চিন্তামগ্ন থাকো (আকিফুনা) মান্যরত অবস্থায় (ফি আল মাসজিদি)। এটাই আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা, তাই সে সীমারেখার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তার নির্দেশ সমূহ সুষ্পষ্ট করেন যাতে মানুষেরা খাঁটি মানুষ (মুত্তাকি) হতে পারে।

এই আয়াতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দঃ

রাফাছা মানে approach/ আলোচনার সুত্রপাত করা নিসাদের সাথে যারা শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাহিরে যেতে পারে না কিংবা যারা আপনার গৃহে কর্মচারী কিংবা আপনার দায়িত্বে থাকা এতিম অর্থাৎ যারা আপনার উপরে নির্ভরশীল অর্থনৈতিক বা শারীরিক ভাবে। সেকারণে তাদেরকে লিবাসুন বা আবরণ বলা হয়েছে। আমাদের আবরণ যেমন আমাদের সার্বক্ষনিক সংগী এবং আমরা যেভাবে আমাদের আবরণের যত্ন নিই, নিসাদেরও যত্ন নেয়া মুমিনদের দায়িত্ব। ৪ঃ১২৭ এ নিসার অন্তর্ভুক্ত কারা তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে। সমাজের এই নির্ভরশীল অংশটাই হলো নিসা।

নিসা মানে নারী নয়। নিসা শব্দটি এতিম, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী সবার জন্যই প্রযোজ্য তার লিঙ্গ যাই হোক না কেন।

স্পেশাল সিয়াম

সাধারণ/স্বাভাবিক সিয়ামের সময় কালে (২ঃ১৮০-১৮৪) কারো সাথে দিনে রাতে কখনোই কথা বলা যাবে না। কিন্তু এই স্পেশাল সিয়ামে (২ঃ১৮৫-১৮৭) দিনে সিয়াম পালন করে রাতে আলোচনা/কথা বলার বিধান আল্লাহ দিয়েছেন।

এই স্পেশাল সিয়ামটা শুধুমাত্র তাদের জন্যই প্রযোজ্য ছিল যারা কুরআন নাযিলের(প্রচারের) ঘটনাটির ঐতিহাসিক স্বাক্ষী ছিল (ফামান শাহিদা মিনকুম)। এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি বিবাহবার্ষিকীর মত প্রতিবছর আসবে না।

কাজেই এই স্পেশাল সিয়াম (দিনে সিয়াম পালন, রাতে আলোচনা করা) সবার জন্য নয়। এই স্পেশাল সিয়ামের উদ্দেশ্য ছিল মুমিনেরা যেন সিয়াম পালনের মাধ্যমে নিজেদের কথা বলা থেকে বিরত থেকে একাগ্রচিত্তে (আকিফুনা) মান্যরত অবস্থায় (ফি আল মাসজিদি) দিনের বেলা কুরআন অধ্যয়ন ও আত্মস্থ করে যাতে মন্দতার/পাপাচারের অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে পারে।

আল-ফজর মানে সবসময়, ভোর নয়। ভোরের আরবি হলো সুবাহ।

৩৮ঃ২৮ পড়লেই বুঝতে পারবেন যে মুত্তাকী শব্দের বিপরীত শব্দ হলো আল-ফুজারি। অর্থাৎ খাঁটি মানুষের বিপরীত শব্দ হলে পাপী/মন্দ মানুষ।

৩৮ঃ২৮ “আমরা কি যারা বিশ্বাসী এবং ভারসাম্য রক্ষাকারী (আমিলু আল সালিহাতি) তাদেরকে একইরকম প্রতিদান দিব তাদের মত যারা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে (মুফসিদিনা)? নাকি আমরা মুত্তাকিদের একই প্রতিদান দিব তাদের মত যারা পাপীষ্ঠ/মন্দ (আল ফুজারি)?”

১৯ঃ২৬ অনুসারে মরিয়ম আল্লাহর কাছে সিয়াম পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অতঃপর সে কারো সাথে কথা বলবে না।

অর্থাৎ কথা না বলা হলো অন্যতম একটি শর্ত। কারো সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে মানুষ কি করে একা একা?

উত্তর হলো ১) পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করা বা পরিস্থিতিটা গ্রাস করা (কুল) এবং আত্মস্হ করা (আশরাবু) যেটা মরিয়ম করেছে।

২ঃ১৮৭ তেও কুরআন প্রচারের ঘটনা/পরিস্থিতিতে কুরআনের অধ্যয়ণ ও অনুসন্ধান করতে বলা হচ্ছে, আদেশ গুলো (কাতাবা) কুল ও আশরাবু করতে বলা হচ্ছে।

কাজেই সিয়ামের মূল ও প্রথম শর্ত হলো “কথা না বলা”/যোগোযোগ বিচ্ছিন্ন করে একা থাকা।

এরপর একা একা পরিস্থিতি/ঘটনা/পাপকাজ নিয়ে গভীরে চিন্তামগ্ন থেকে অনুসন্ধান/আত্মসমালচোনা বা পাপের সংশোধন করতে বলা হচ্ছে। এগুলো সবই সিয়াম পালনের অংশ।

অর্থাৎ “শুধুই কথা বলা থেকে বিরত থেকে ঘোড়ার ঘাস কাটা সিয়াম নয়।”

২ঃ১৮৮ “এবং তোমরা একে অপরের সম্পদ (আমওয়ালাকুম) অন্যায় ভাবে ভক্ষণ/গ্রাস করো না (তাকুলু) অথবা প্রশাসকের নিকট পাঠিও না যাতে সম্পদের কিয়দংশ গ্রাস করতে পারো অন্যায় ভাবে এবং সচেতনভাবে।”

২ঃ১৮৯ “তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে কখন আওয়াজ তোলা/প্রতিবাদ করা উচিৎ (আহিল্লা)। বলুন “প্রয়োজনের সময় (মাওয়াকিতু) মানুষের জন্য (লিন্নাসি) এবং যুক্তিতর্কের/বিরোধের (আল-হাজ্জ) সময়। এবং এটি উদারতা নয় (আল-বিরা) যে কেউ ষড়যন্ত্রের জাল বুনে (বুয়ুতু, ৪ঃ৮১,৪ঃ১০৮) পিছনে থেকে, বরং উদারতা হলো যে আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপন করে (ইত্তাকু) এবং ষড়যন্ত্রকে (বুয়ুতু) সামনে এনে তা উন্মোচন করে দেয় (ওয়া আতু)। এবং আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপন করো (ইত্তাকু) যাতে তোমরা সফলকাম হও।”

২ঃ১৯০ “লড়াই করো (কুতিলা) আল্লাহর পথে যারা তোমাদের সাথে লড়াই করে কিন্তু আগ্রাসন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ আগ্রাসীদের পছন্দ করেন না।”

২ঃ১৯১ “এবং লড়াই করো (কাতিলু) তাদের সাথে যেখানেই তাদের অতিক্রম করা যায় এবং তাদেরকে উচ্ছেদ করো সেখান থেকে যেখান থেকে তারা উচ্ছেদ করেছিল তোমাদের। এবং অত্যাচার/নির্যাতন (ফিতনা) হলো লড়াই (কাতিল) এর চেয়েও জঘন্য পাপ। এবং নিষিদ্ধ মসজিদের ব্যাপারে তাদের সাথে লড়াই করো না যদি না তারা সে ব্যাপারে লড়াই করে তোমাদের সাথে। কিন্তু তারা যদি লড়াই করে, তাহলে তোমরাও তা প্রতিহত করো। এটাই সত্য অস্বীকারকারীদের (কাফির) প্রাপ্য কর্মফল।”

২ঃ১৮০-১৯১ এর বিষয়বস্তু হলো

১) উইল করা মুমিনের কর্তব্য যা কুতিবা বা আদেশ করা হয়েছিল।

২) যে উইল পরিবর্তন করে সে পাপ করে।

৩) সেই পাপের সংশোধন হিসাবে সাধারণ সিয়াম পালন করতে হবে (২ঃ১৮৩-১৮৪)। আর তা হলো নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত কথা বলা থেকে বিরত থেকে আত্মসংশোধন করা।

৪) এই সাধারণ সিয়াম অতীত পূর্বপুরুষ থেকে ভবিষ্যত সকলের জন্য প্রযোজ্য। এটি হলো কথা বলা থেকে বিরত থেকে/ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আত্মসংশোধন মূলক সিয়াম।

৫) এই সাধারণ সিয়ামের বিকল্প হিসাবে গরীব খাওয়ানো, দাস মুক্ত করা ইত্যাদি ব্যবস্থা আছে পাপের মাত্রার উপরে নির্ভর করে (৫ঃ৯৫, ৪ঃ৯২ ইত্যাদি)

৬) ২ঃ১৮৫-১৮৭ হলো স্পেশাল সিয়াম যেখানে টানা কথা বলা থেকে বিরত থাকার বদলে রাত পর্যন্ত বিরত থাকার বিধান দিয়েছেন। কারণ এটি আত্মসমালোচনা বা সংশোধনমূলক সিয়াম নয়। এটি ছিল কুরআন নাযিলের(প্রচারের) সময় মুমিমদের কুরআন অধ্যয়ন ও আত্মস্হ করার উদ্দেশ্যে জারিকৃত সিয়ামের আদেশ।

৭) এই সিয়াম পালন এবং কুরআন নাযিল (প্রচারের) সময়ে ২ঃ১৮৮ অনুসারে মুমিনদের উপরে আঘাত এসেছিল, তাদের সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।

৮) সেকারণে ২ঃ১৮৯ তে প্রতিবাদের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে মুমিনরা। মানুষের প্রয়োজনে এবং বিরোধের সময়েই প্রতিবাদ করতে হবে এবং তাদের সাথে লড়াই করতে হবে যারা এই অন্যায় নির্যাতন করেছিল। তবে আগ্রাসী হওয়া যাবে না। নির্যাতনকারীদেরও তাদের দখল করা মুমিনদের সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। সেজন্য লড়াই করতে হবে।

৯) ২ঃ১৯১ অনুসারে কাফিরদের সাথে তাদের নিষিদ্ধ মাসজিদ (মাসজিদ আল হারাম) /তাদের শিরকী বিশ্বাস নিয়ে লড়াই করার আপাতত প্রয়োজন নেই যদি না তারা এ ব্যাপারে লড়াই করে। কারণ মুমিনদের লড়াই করার মূল উপপাদ্য ছিল তাদের হারানো সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করা।

এসব বিরোধের সম্ভাবনার কারণেই শুরুতেই ২ঃ১৮০ তে দলিল লেখক দ্বারা সম্পত্তি উইল করার আদেশ জারি করা হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *