ফাহিশা (فَاحِشَةً) ও আল-ফাহশা (الْفَحْشَاۤء

ফাহিশা কি ও কোন ধরনের কাজ?

প্রচলিত অনুবাদে ফাহিশা (فَاحِشَةً) বা আল-ফাহশা (الْفَحْشَاۤءِ) অর্থ ;
১.অশ্লীলতা,
২.অনৈতিকতা,
৩.Immorality,
৪.indecency ইত্যাদি অর্থ লেখা হয়েছে। যা উদ্দেশ্য মূলক অনুবাদ বলেই মনে হয়। তদন্ত করে দেখা যায়, এই অর্থগুলো বানানোর কারণে- মহান আল্লাহ যেসব বিষয়কে ফাহিশা/আল-ফাহিশা বলেছেন, সেসব বিষয় আড়ালে পড়ে গেছে। অনেকটা খাঁটি দুধে ব্যাপক পানি মেশালে যা হয়! কতটুকু দুধ আর কতটুকু পানি—তা খুঁজে পাওয়া যায় না।

যাই হোক,তারপরও আমরা চেষ্টা করবো।

অনুবাদ, ব্যাখ্য-বিশ্লেষণ থেকে ফাহিশা (فَاحِشَةً) অর্থ দাঁড়ায়- জঘন্য অপকর্ম।

শুরুতেই বোঝা দরকার, ফাহিশা ও আল-ফাহিশা এক বিষয় নয়। শাব্দিক বিচারেই এর বিশাল পার্থক্য দেখা যায়। ফাহিশা শব্দের সঙ্গে ‘আল’ (আলিফ+লাম) যুক্ত হওয়ায় কিছু সুনির্দিষ্ট ফাহিশা’র কথা চিহ্নিত করা হয়েছে। আর শুধু ‘ফাহিশা’ (فَاحِشَةً) দিয়ে সাধারণ বৈশিষ্ট্যের ফাহিশার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেসব বিষয় জানানো হয়েছে। তেমন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যা কিছুই পড়বে, তা-ই ফাহিশা।

মনে রাখবেন, যখন শুধু ফাহিশা (فَاحِشَةً) পাওয়া যাবে, তার অর্থ জঘন্য অপকর্ম।
যখন আল-ফাহ্‌শায়ি (الْفَحْشَاۤءِ) পাওয়া যাবে, তর অর্থ- সুনির্দিষ্ট একটি জঘন্য অপকর্ম।
আবার যখন আল-ফাওয়াহিশা (ٱلْفَوَٰحِشَ) পাবেন, তার অর্থ- অনেক গুলো জঘন্য অপকর্ম যা বহুবচন।
চলুন বিস্তারিত কিতাব থেকেই দেখা যাক।

১.ফাহিশা বা জঘন্য অপকর্মের প্রকারভেদ

৬:১৫১ ও ৭:৩৩ অনুযায়ী আল-ফাওয়াহিশা (ٱلْفَوَٰحِشَ) দুই ধরনের- প্রকাশ্য ও গোপন।

প্রকাশ্য ফাহিশাগুলো হলো:

১. যেসব ‘জঘন্য অপকর্ম’ মুমিনরা ভুল করে করে ফেলে, তা প্রকাশ্য হওয়ার কথা।

২. বাপ-চাচা-দাদাদের বিয়ে করা নারীদের বিয়ে করা প্রকাশ্য অপকর্ম।

৩. আগে থেকে চলে আসা বিভিন্ন ধরনের (অনির্দিষ্ট) কাজ যা পূর্বপুরুষরা করতো এবং সেসব কাজ আল্লাহ নির্দেশ—এমন দাবি করা হয়।

অন্যদিকে গোপন ফাহিশা হলো:

১. জিনা: যে পুরুষ ধর্ষণ করে এবং বিবাহিত নারীর ইচ্ছায় তার সঙ্গে যৌনসম্ভোগ করা।

২. সমকামী পুরুষের পরষ্পরের যৌনকর্ম।

সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ফাহিশা (الْفَحْشَاۤءِ)/ (ٱلْفَوَٰحِشَ) কোনগুলো?

কিছু ক্ষেত্রে মহাগ্রন্থে সরাসরি আল-ফহাশায়ি উল্লেখ করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে “জঘন্য অপকর্মের” বর্ণনা দিয়ে তাকে সরাসরি ফাহিশা (فَاحِشَةً) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে; যা নিম্নরূপ।

১. লুতের জাতির পুরুষদের সমকামিতা ৭:৮০, ২৭:৫৪, ২৯:২৮

২. বিবাহিত নারীর সঙ্গে অন্য পুরুষের যৌন সম্পর্ক স্থাপন ১২:২৪

৩. ধর্ষণ বা আয-জিনা (الزِّنٰىٓ) ১৭:৩২

৪. পিতৃপুরুষদের বিয়ে করা নারীদের ফের বিয়ে করা ৪:২২

২. এবার চলুন, বিভিন্ন আয়াত থেকে ফাহিশা ও আল-ফাহিশা’র ব্যবহার দেখি।

২:১৬৯
সে-তো শুধু (اِنَّمَا) সে তোমাদের নির্দেশ দেয় অজ্ঞতার অন্যায় ও জঘন্য অপকর্মের (بِالسُّوْۤءِ وَالْفَحْشَاۤءِ) আর যেন তোমরা বলো আল্লাহকে নিয়ে যা তোমরা জানো না (وَاَنْ تَقُوْلُوْا عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ)।

৩:১৩৫
আর তারা যখন করে জঘন্য অপকর্ম (وَالَّذِيْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً) অথবা নিজেদের ওপর নির্যাতন (اَوْ ظَلَمُوْٓا اَنْفُسَهُمْ) আল্লাহকে স্মরণ হলে (ذَكَرُوا اللّٰهَ) অতঃপর তারা ক্ষমা চায় তাদের অন্যায়ের জন্য (فَاسْتَغْفَرُوْا لِذُنُوْبِهِمْۗ) আর আল্লাহ ছাড়া কে ক্ষমা করে ভুলগুলো/অন্যায়গুলো (وَمَنْ يَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اللّٰهُ ۗ); আর যা করেছে তাতে অটল থাকেনা (وَلَمْ يُصِرُّوْا عَلٰى مَا فَعَلُوْا) যখন তারা জানতে পারে (وَهُمْ يَعْلَمُوْنَ)।

৪:১৫
আল-ফাহিশা (সুনির্দিষ্ট ٱلْفَٰحِشَةَ) যদি নারীরা করে এবং সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

৪:২২
পিতৃপূরুষদের বিবাহিত নারীদের সংশ্লিষ্ট সন্তানদের বিয়ে করা একটি ফাহিশা কাজ (فَٰحِشَةً)।

৪:২৫
অনুযায়ী কোনো নারী বিয়ের পর অনৈতিক যৌনতায় জড়ালে তা ফাহিশা (فَٰحِشَةٍ)।

৭:২৮
অনুযায়ী একরকম ফাহিশা (فَٰحِشَةً) হলো- আল্লাহর নামে পূর্ব থেকে চলে আসা কিছু বিষয়।

৭:৮০ ও ২৯:২৮
অনুযায়ী লুতের কওম আল-ফাহিশাতা (ٱلْفَٰحِشَةَ) বা সুনির্দিষ্ট একটি ফাহিশা করেছিল যা পুরুষের সমকামিতা।

১৭:৩২
অনুযায়ী, আয-জিনা (الزِّنَىٰ) হলো একটি ফাহিশা (فَاحِشَةً) যা পাপ/মন্দ/জঘন্য পথ (سَاءَ سَبِيلًا)।

১২:২৪
আর নিঃসন্দেহে (নারী) তার প্রতি আসক্ত ছিল (وَلَقَدْ هَمَّتْ بِهٖۙ); এবং সেও আসক্ত ছিল তার প্রতি (وَهَمَّ بِهَا ۚ); যদিনা সে দেখতো যে (لَوْلَآ اَنْ رَّاٰى) তার রবের সাক্ষ্য-প্রমাণ (بُرْهَانَ رَبِّهٖۗ); এভাবে ফিরিয়ে রাখি তার থেকে (كَذٰلِكَ لِنَصْرِفَ عَنْهُ) অজ্ঞতাবশত অন্যায় (السُّوْۤءَ) ও জঘন্য অপকর্ম (وَالْفَحْشَاۤءَۗ); নিশ্চয়ই সে বিশুদ্ধ চিত্তের স্বাধীন কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত (اِنَّهٗ مِنْ عِبَادِنَا الْمُخْلَصِيْنَ)!

এই আয়াত অনুযায়ী, স্বামী থাকা অবস্থায় অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা একটি সুনির্দিষ্ট ফাহিশা (ٱلْفَحْشَآءَ) বা “জঘন্য অপকর্ম”।

চুক্তিবদ্ধ নারীর সঙ্গে জোরপূর্বক কোনো পুরুষ শারীরিক সম্পর্ক করলে—তা ধর্ষণ বা জিনা; সেটাও একটি ফাহশা। এক্ষেত্রে নারী নিরাপরাধী। তবে, ওই নারী স্বেচ্ছায় তাতে জড়ালে, সেই অবস্থা/দশা/কাজটা আল-ফাহ্‌শা বা সুনির্দিষ্ট একটি জঘন্য অপকর্ম; এখানে নারী বাধা না-দেওয়া এবং প্ররোচনা দেওয়ায় প্রধান অপরাধী।
এখানে শর্ত হলো:

১. যৌন সম্পর্কে আগ্রহী হবে বিবাহিত নারী এবং সে কাজে তার সম্মতি থাকবে।

২. দুই পক্ষের শারীরিক সম্পর্ক হতে হবে।

তাহলেই তা আল-ফাহশা হবে। যা থেকে নবী ইউসুফ বেঁচে গিয়েছিলেন।

অন্যথায়,
শর্ত পূরণ না হলে, তা অন্য কিছু হতে পারে। কিন্তু, আল-ফাহ্‌শা হবে না।

৩. গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, “জঘন্য অপকর্ম” বা ফাহিশা থেকে বাঁচার উপায় কি?

মহাগ্রন্থে বলা হয়েছে:

৩:১৩৫
আর তারা যখন করে “জঘন্য অপকর্ম” (وَالَّذِيْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً) অথবা নিজেদের ওপর নির্যাতন (اَوْ ظَلَمُوْٓا اَنْفُسَهُمْ) আল্লাহকে স্মরণ হলে (ذَكَرُوا اللّٰهَ) অতঃপর তারা ক্ষমা চায় তাদের অন্যায়ের জন্য (فَاسْتَغْفَرُوْا لِذُنُوْبِهِمْۗ) আর আল্লাহ ছাড়া কে ক্ষমা করে ভুল গুলো/অন্যায় গুলো (وَمَنْ يَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اللّٰهُ ۗ); আর যা করেছে তাতে অটল থাকেনা (وَلَمْ يُصِرُّوْا عَلٰى مَا فَعَلُوْا) যখন তারা জানতে পারে (وَهُمْ يَعْلَمُوْنَ)।

২৯:৪৫
বর্ণনা করো (ٱتْلُ) যা ওহি করা হয়েছে তোমাকে (مَآ اُوْحِيَ اِلَيْكَ) আল-কিতাবে (مَآ اُوْحِيَ اِلَيْكَ) এবং যোগাযোগ-কার্যক্রম প্রতিষ্ঠা করো (وَاَقِمِ الصَّلٰوةَۗ ); নিশ্চয়ই যোগাযোগের কার্যক্রম “জঘন্য অপকর্ম”ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে (اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَاۤءِ وَالْمُنْكَرِ); আর নিশ্চিত ভাবে আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ (وَلَذِكْرُ اللّٰهِ اَكْبَرُ ۗ); আর তোমরা যা করো আল্লাহ তা জানেন (وَاللّٰهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُوْنَ)।

অর্থাৎ
‘আস-সালাওয়াত’ বা যোগাযোগ কার্যক্রম হলো ‘আল-ফাহশায়ি ওয়াল মুনকার’ থেকে বাঁচার পথ ও পদ্ধতি। সব কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর যিকর! বা মহান রবের আদেশ-নির্দেশ-উপদেশ স্মরণ রাখা। নিশ্চিতভাবে আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ

৪.যেসব অন্যায় কাজ ও ফাহিশা আলাদা বিষয়।

০৭:৩৩
ঘোষণা করো- আমার রব শুধু নিষিদ্ধ করেছেন (قُلْ اِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ) জঘন্য অপকর্ম গুলো (ٱلْفَوَٰحِشَ) যা প্রকাশ্যে ও গোপনে হয় (مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ) এবং স্বেচ্ছাকৃত অন্যায় (وَالْاِثْمَ) ও অসঙ্গত নিপীড়ন-নির্যাতন-বিদ্রোহ (وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ); আর তোমরা আল্লাহর বিষয়ে সেসব শিরক করো (وَاَنْ تُشْرِكُوْا بِاللّٰهِ) যেসব বিষয়ে তিনি কোনও প্রমাণ দেন নি (مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهٖ سُلْطٰنًا); এবং তোমরা আল্লাহর সম্পর্কে না জেনে কথা বলো (وَّاَنْ تَقُوْلُوْا عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ)।

এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে ‘
১.স্বেচ্ছাকৃত অপরাধ (الْاِثْمَ)’,
২.অন্যায়-বিদ্রোহ (الْبَغْ),
৩.আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা এবং
৪.আল্লাহর বিষয়ে মনগড়া কথা বলার মতো বিষয়গুলো থেকে আল-ফাহিশা ভিন্ন।

১৬:৯০
অনুযায়ী, আল্লাহ নিষেধ করেন আল-ফাহশা ওয়াল-মুনকার বা “জঘন্য অপকর্ম” ও খারাপ কাজ এবং আল-বাগয়ি বা অবাধ্যতা/অন্যায্য বিদ্রোহ।

এই দুই আয়াতে দেখা যায় সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী বড় ধরনের অপরাধ ও অন্যায় আচরণের তালিকা। সে তালিকায় ‘ফাহিশা’ ভিন্ন একটি “জঘন্য অপকর্ম” হিসেবেই তালিকাভুক্ত হয়েছে।

৫.ফাওয়াহিশা বনাম কবিরা ইসম {(كَبٰۤىِٕرَ الْاِثْمِ) বনাম (الْفَوَاحِشَ)} অর্থাৎ, জঘন্য অপকর্ম বনাম বড় স্বেচ্ছা-অপরাধ

৪২:৩৭
অনুযায়ী, ‘কবিরা ইসম’ (كَبٰۤىِٕرَ الْاِثْمِ) বা বড় অপরাধের সঙ্গে ‘আল-ফাওয়াহিশা’ (الْفَوَاحِشَ) উল্লেখ করা হয়েছে। বোঝা যায়- এ দুটি সমপর্যায়ের অপরাধ কাজ।

৫৩:৩২
অনুযায়ী ‘কবিরা ইসম’ (كَبٰۤىِٕرَ الْاِثْمِ) বা বড় অপরাধ এবং ‘আল-ফাওয়াহিশা’ (الْفَوَاحِشَ) বা “জঘন্য অপকর্ম” থেকে দূরে থাকতে পারলে মহান রবের পক্ষ থেকে ক্ষমার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।

কিতাব অনুযায়ী আল-ফাহিশা বা সুনির্দিষ্ট সেসব অসংলগ্ন ও দৃষ্টিকটু কাজ থেকে বিরত থাকলে মহান আল্লাহ ক্ষমা করবেন।

৬. আল-ফাহিশার নির্দেশনা ও উসকানি আসে কোথা থেকে?

২:১৬৯
সে-তো শুধু (اِنَّمَا) সে তোমাদের নির্দেশ দেয় (يَأْمُرُكُمْ) অজ্ঞানতার অপরাধ ও “জঘন্য অপকর্ম” (بِالسُّوْۤءِ وَالْفَحْشَاۤءِ) আর যেন তোমরা আল্লাহকে নিয়ে বলো- যা তোমরা জানো না (وَاَنْ تَقُوْلُوْا عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ)।

২:২৬৮
শয়তানগুলো তোমাদের ভয় দেখায় (اَلشَّيْطٰنُ يَعِدُكُمُ) দারিদ্র্যের ও তোমাদের নির্দেশ দেয় “জঘন্য অপকর্ম” (الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاۤءِ); এবং আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দেন তাঁর থেকে ক্ষমা ও তাঁর অনুগ্রহের (وَاللّٰهُ يَعِدُكُمْ مَّغْفِرَةً مِّنْهُ وَفَضْلًا); আর আল্লাহ প্রাচুর্যময় সর্বজ্ঞ (وَاللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ)!

অর্থাৎ,
আল-ফাহশায়ি বলতে যেসব “জঘন্য অপকর্ম” বোঝায় মানুষের কাছে তার নির্দেশনা আসে আশ-শাইত্বনের পক্ষ থেকে।

৭.সর্বশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ বিশ্লেষণ ও একটি প্রশ্ন:

১.জিনা বা ধর্ষণ,
২.বিবাহিত মেয়ের ইচ্ছায় তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন,
৩.পুরুষের সমকামী আচরণ (সে হিসেবে বলাৎকার) এবং
৪.পিতৃপুরুষদের বিয়ে করা নারীদের ফের বিয়ে করা সুস্পষ্ট ফাহিশা বা জঘন্য অপকর্ম।

পাশাপাশি,
৫.মহান আল্লাহর নামে এমন কিছু বলা, পালন করা—যা অতীত থেকেই হয়ে আসছে, কিন্তু মহাগ্রন্থে তার কোনো প্রমাণ নাই, দলিল নাই, নির্দেশনা নাই, সেসবও ফাহিশা। এই ধারায় নতুন করে আরও ফাহিশা ভবিষ্যতে আসবে বৈকি!

এর বাইরে,
৬.বিভিন্ন দেশে, সমাজে, পত্র-পত্রিকায়, অনলাইনে, রেডিও-টিভি-চলচ্চিত্রের দৃশ্য, রগরগে বিজ্ঞাপনে যেসব বিষয় দেখা যায়, তা কি মহান আল্লাহর ঘোষিত ফাহিশা’র মধ্যে পড়ে?

ফাহিশা বা জঘন্য কর্মের বৈশিষ্ট্য এবং সু-নির্দিষ্ট ফাহিশা’র বাইরে আর কোনো অপকর্মকে ‘ফাহিশা’ বলা যাবে কি?
ঠিক যেমন, যা কিছু ‘হারাম’ হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, তার বাইরে কিছু হারাম বা নিষিদ্ধ হতে পারে কি?

মূর্খতা ও অজ্ঞানতার কারণে যে মন্দকাজ হয়- তাকে আস-সুয়া (السُّوْ) বলা হয়েছে। দেখুন ৪:১৭ ও ১৬:১১৯ (ইয়ামালুনা আস-সুয়া বিজাহালাতিন, আল্লাযি আ’মিলু আস-সুয়া বিজাহালাতিন)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *