মহাগ্রন্থ আল কুরআনে উল্লেখিত আল্লাহর হুকুম আহকাম বা নির্দেশনাবলী (Order), যোগাযোগ মাধ্যম গুলোকে এক শব্দে ‘সালাত’ বলা হয়।

অন্যান্য সকল নবী রাসুলদের সময়ও সালাত প্রচলিত ছিল তবে সেটা প্রচলিত আনুষ্ঠানিক সালাত নয়।

১.সুরা হুদে দেখুন সালাতের সংজ্ঞা:

( ১১:৮৪-৯৫)
প্রচলিত অনুবাদ

আর আমি মাদইয়ান বাসীদের কাছে তাদের ভাই শুআইবকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায় , তোামরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই, আর মাপে ও ওজনে কম দিও না, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে কল্যাণের মধ্যে দেখছি, কিন্তু আমি তোমাদের উপর আশংকা করছি এক সর্বগ্রাসী দিনের শাস্তি। হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ন্যায়সঙ্গত ভাবে মাপো ও ওজন করে দিও, লোকদের কে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না। যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তবে আল্লাহ অনুমোদিত যা বাকী থাকবে তা তোমাদের জন্য উত্তম। আর আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই। তারা বলল, হে শু’আইব! তোমার সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) কি তোমাকে নির্দেশ দেয়, আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা যার ইবাদাত করত আমাদেরকে তা বর্জন করতে হবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও? তুমি তো বেশ সহিষ্ণু ও ভালো। তিনি বললেন, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ভেবে দেখেছ কি, আমি যদি আমার রব প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকি এবং তিনি যদি তাঁর কাছ থেকে আমাকে উৎকৃষ্ট রিযিক দান করে থাকেন (তবে কি করে আমি আমার কর্তব্য হতে বিরত থাকব?) আর আমি তোমাদেরকে যা নিষেধ করি আমি নিজে তার বিপরীত করতে ইচ্ছে করি না। আমি তো আমার সাধ্যমত সংস্কারই করতে চাই আমার কার্যসাধন তো আল্লাহরই সাহায্যে, আমি তারই উপর নির্ভর করি এবং তারই অভিমুখী। আর হে আমার সম্প্রদায়,আমার সাথে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদেরকে এমন অপরাধ না করায় যার ফলে তোমাদের উপর তার অনুরূপ বিপদ আপতিত হবে যা আপতিত হয়েছিল নূহের সম্প্রদায়ের উপর অথবা হুদের সম্প্রদায়ের উপর কিংবা সালেহের সম্প্রদায়ের উপর, আর লূতের সম্প্রদায় তো তোমাদের থেকে দূরে নয়। তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তার দিকে ফিরে আস, আমার রব তো পরম দয়ালু, অতি স্নেহময়। তারা বলল, হে শুআইব তুমি যা বল তার অনেক কথা আমরা বুঝি না এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলতাম, আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায় তোমাদের কাছে কি আমার স্বজনবর্গ আল্লাহর চেয়ে বেশী শক্তিশালী? আর তোমরা তাকে সম্পূর্ণ পিছনে ফেলে রেখেছ। তোমরা যা কর আমার রব নিশ্চয় তা পরিবেষ্টন করে আছেন। আর হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে কাজ করতে থাক, আমিও আমার কাজ করছি। তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কে মিথ্যাবাদী। আর তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি। আর যখন আমাদের নির্দেশ আসল তখন আমি শুআইব ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করেছিলাম। আর যারা সীমালংঘন করেছিল বিকট চীৎকার তাদেরকে আঘাত করল, ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় পড়ে রইল, যেন তারা সেখানে কখনো বসবাস করেনি। জেনে রাখ! ধ্বংসই ছিল মাদইয়ানবাসীর পরিণাম।
যেভাবে ধ্বংস হয়েছিল সামূদ সম্প্রদায়।(১১:৮৪-৯৫)

Al-‘Ankabut ২৯:৪৫

اُتْلُ مَاۤ اُوْحِيَ اِلَيْكَ مِنَ الْكِتٰبِ وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰي عَنِ الْفَحْشَآءِ وَالْمُنْكَرِ ؕ وَلَذِكْرُ اللّٰهِ اَكْبَرُ ؕ وَاللّٰهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُوْنَ

তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে পাঠ করে শুনাও এবং সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য, যোগাযোগ সমূহ) বাস্তবায়ন কর। নিশ্চয় সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব¡-কর্তব্য যোগাযোগ সমূহ) অশ্লীল, অনৈতিক ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর যিকির (নির্দেশনাই) তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর।
(২৯:৪৫)

Al-Kahf ১৮:২৭

وَاتْلُ مَاۤ اُوْحِيَ اِلَيْكَ مِنْ كِتَابِ رَبِّكَ ۚؕ لَا مُبَدِّلَ لِكَلِمٰتِهٖ ۚ۟ وَلَنْ تَجِدَ مِنْ دُوْنِهٖ مُلْتَحَدًا

আর তোমার রবের কিতাব থেকে তোমার নিকট যে ওহী করা হয়, তুমি তা পাঠ করে শুনাও। তাঁর বাণী সমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই এবং তিনি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল তুমি পাবে না।
(১৮:২৭)

এভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এক জাতির প্রতি, যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়েছে, তাদের নিকট পাঠ করার জন্য, যা আমি তোমার প্রতি ওহী করেছি।
Ar-Ra’d ১৩:৩০

كَذٰلِكَ اَرْسَلْنٰكَ فِيْۤ اُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهَاۤ اُمَمٌ لِّتَتْلُوَا۠ عَلَيْهِمُ الَّذِيْۤ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُوْنَ بِالرَّحْمٰنِ ؕ قُلْ هُوَ رَبِّيْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَاِلَيْهِ مَتَابِ

এমনিভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এমন এক জাতির নিকট, যার পূর্বে অনেক জাতি গত হয়েছে, যেন আমি তোমার প্রতি যে ওহী প্রেরণ করেছি, তা তাদের নিকট তিলাওয়াত কর। অথচ তারা রহমানকে অস্বীকার করে। বল, ‘তিনি আমার রব, তিনি ছাড়া আর কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তাঁরই উপর আমি তাওয়াক্কুল করেছি এবং তাঁরই দিকে আমার প্রত্যাবর্তন’।

আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি কুরআন পাঠ করে শোনাইতে। অতঃপর যে ব্যক্তি সৎ পথ অনুসরণ করে, সে তা অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং কেহ ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলে তুমি বলও, আমিতো শুধু সর্তককারীদের মধ্যে একজন।
An-Naml ২৭:৯২

وَاَنْ اَتْلُوَا الْقُرْاٰنَ ۚ فَمَنِ اهْتَدٰي فَاِنَّمَا يَهْتَدِيْ لِنَفْسِهٖ ۚ وَمَنْ ضَلَّ فَقُلْ اِنَّمَاۤ اَنَا مِنَ الْمُنْذِرِيْنَ

‘আর আমি যেন আল-কুরআন অধ্যয়ন করি, অতঃপর যে হিদায়াত লাভ করল সে নিজের জন্য হিদায়াত লাভ করল; আর যে পথভ্রষ্ট হল তাকে বল, ‘আমি তো সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত।’

আল কুরআনে বর্নিত প্রতিটা আদেশ নির্দেশনাই হচ্ছে সালাত ৷বিশ্বাসীগণ সর্বদাই সালাতে (আল্লাহর আদেশ নির্দেশ পালনে, যোগাযোগের মাধ্যমে আল্লাহর বিধান পালনে অগ্রসর হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *