– – –
মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ও ঐশ্বরিক ইচ্ছার সম্পর্ক বুঝতে ৯২/৮-২১, ৯০/১০-১৮ আয়াতগুলি প্রণিধানযোগ্য।
.প্রথমত. মানুষের ইচ্ছাশক্তি পরম ইচ্ছার অধীন তথা ঈশ্বরপ্রদত্ত ও নিয়ন্ত্রিত, একটি মানবিক সীমার মধ্যে কার্যকর। ঈশ্বর প্রদত্ত মানুষের ইচ্ছাশক্তিতে স্বাধীন নির্বাচনের ক্ষমতা কার্যকর থাকে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে কতোগুলি বিকল্প থেকে। ঈশ্বর এমন মানবিক ইচ্ছায় হস্তক্ষেপ করেন না। ঈশ্বর/আললাহ মানুষের সে ইচ্ছাকে তাদের মতো চলতে দেন, অর্থাৎ তা বাস্তবায়নের অনুমোদন দেন।.
তাহলে এর কী ব্যাখ্যা যখন বলা হয় আললাহ চাইলে সকলেই সঠিক পথ পেতো?
আললাহ চাইলে সকলেই বিশ্বাস এনে সোজাপথে চলতো, কিন্তু তিনি চান মানুষ নিজের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে বুদ্ধিসত্তা ও নৈতিক বিচারবোধ প্রয়োগ করে সৎপথে চলুক, এজন্য আছে পথপ্রদর্শন। মানুষ পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হতে চাইলেও আললাহ তাতে বাধা দেন না, কারণ এটিই পরীক্ষা।
‘যে কোনো অন্যায় কাজ করে, তা কেবল নিজের বিরুদ্ধেই যায়। আললাহ জ্ঞানী,ন্যায়বিচারক।’(কুর’আন,৪/১১০-১১১)
.অথবা এর কী ব্যাখ্যা যখন বলা হয় সত্যপ্রত্যাখানকারী অকৃতজ্ঞদের ব্যাপারে বলা হয় তাদের উপর সীলমোহর মেরে দেয়া হয়েছে?
কিছু মানুষ আছে যারা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষাগ্রহণ করে নিজেকে শুধরে নিতে চায় না। তারা শুনেও শুনে না, বুঝেও বুঝে না। তাদের অন্তর তালাবদ্ধ। এই পরিণতি তাদের নিজেদের কারণে।
.কিন্তু যে নাছোড় কৃপণ হয়ে থাকে আর নিজেকে অভাবমুক্ত মনে করেআর সবচেয়ে ভালো কাজে অস্বীকৃতি জানায়আমি তাকে কঠিন পথের দিকে সহজভাবেই যেতে দিবো।আর তার অধঃপতনের কালে উপার্জিত অর্থসম্পদ কোনো কাজে আসবে না।নিশ্চয়, আমি পথপ্রদর্শক।আর আমি পরকালের ও ইহকালের মালিক।তাই আমি তোমাদেরকে এক লেলিহান আগুন সম্পর্কে সতর্ক করেছি।নিতান্ত হতভাগ্যরা শুধু এতে জ্বলবে।যে ব্যাক্তি অস্বীকার করেছে আর মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।কিন্তু এ থেকে রক্ষা পাবে যে সঠিক পথপ্রাপ্ত,যে তার সম্পদ দান করে আত্মশুদ্ধির জন্য,আর কারো কাছ থেকে (তার উপর) কোনো প্রতিদান-অনুগ্রহ পেতে নয়,শুধুমাত্র প্রতিপালকের সন্তুষ্টি লাভের আশা ছাড়া।সে নিশ্চয়ই তৃপ্ত হবে।(কুর’আন,৯২/৮-২১)
‘আর তাকে দেখাইনি দুই পথ?কিন্তু এখনো সে গন্তব্যে পৌঁছনোর পথে (আল আকাবাতা) হাঁটেনি। আর কী ভাবে তুমি বুঝবে ঐ গন্তব্যে পৌঁছনোর পথ কেমন?তা হলো, দাসকে বন্দীত্ব থেকে মুক্ত করাঅথবা মঙ্গার দিনে খাবার তুলে দেয়া আত্মীয় সম্পর্কের এতিমের মুখেঅথবা ধূলি মলিন কোনো দরিদ্রকেতারপর সে বিশ্বাসীদের দলভুক্ত হয়এবং একে অন্যকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণেরআর উপদেশ দেয় দয়া ও মহানুভবতার জন্যএরা হলো ডানপন্থী আর যারা আমার নিদর্শনকে অবিশ্বাস করে।’ (কুর’আন, ৯০/১০-১৮)