মক্কা, বাক্কা, ক্বাবা, বাইত পর্ব:০১
৩ঃ৯৬

বাক্কা এর শুরুতে ”বি” preposition আছে যার অনুবাদ করা হয়নি প্রচলিত অনুবাদে। বি মানে with/সাথে/পাশাপাশি

বাক্কা কোনো স্থান নয়। এই শব্দের অর্থ হলো to separate/পার্থক্য সৃষ্টি করা/ব্যবধান গড়ে দেয়া (রুট বা-কাফ-কাফ)।

৩ঃ৯৬ সঠিক অনুবাদ

নিশ্চয়ই (ইন্না) প্রথম (আওলা) রূপরেখাটি/সংবিধান/পরিকল্পনা (বাইতি) প্রচলিত হয়েছিল/স্থাপন করা হয়েছিল (উদিআ) মানুষের জন্য (লিননাসি) যা ছিল (লিল্লাজি) পার্থক্য সৃষ্টির (বাক্কাতা) সাথে/পাশাপাশি (বি) বরকত/আশীর্বাদ (মুবারাকা) এবং পথপ্রদর্শন (হুদা) এ বিশ্বজগতের জন্য (লিলআলামিন)।

অর্থাৎ ইব্রাহিমকে দেয়া প্রথম রূপরেখা বা সংবিধানটি মুশরিক (বহুঈশ্বরবাদ) এবং মুমিনদের (একঈশ্বরবাদ) মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী/ব্যবধান গড়ে দেয়া সংবিধান যা পৃথিবীতে বরকত এবং হুদা/পথপ্রদর্শন এনেছিল।

২ঃ১২৫
ক্বাবা ইব্রাহিম

কুরআনের যে আয়াতটি দিয়ে ক্বাবাঘর বানিয়ে কোটি কোটি মানুষকে আরবের পৌত্তলিক ধর্ম পালন করিয়ে শিরকে লিপ্ত (মাসজিদ আল হারাম) করেছে সে আয়াতের সঠিক অনুবাদঃ

ওয়া জাআলনাঃ
এবং যখন আমরা নির্ধারণ করেছি

বায়তা মাছাবাতাঃ
পুরষ্কারময় রূপরেখা

বাইত/বায়তা/বুয়ুত মানে ঘর না। বরং পরিকল্পনা/ষড়যন্ত্র/সংবিধান/রূপরেখা। ৪ঃ৮১, ৪ঃ১০৮ দেখেন।

ছাওয়াব থেকে মাছাবাতা আসছে। ছাওয়াব মানে পুরষ্কার।

লিন্নাসিঃ
মানুষের জন্য

ওয়া আমনাঃ
এবং তা বিশ্বাসের নির্দেশ দিয়েছি

এখানে ঈমানের ক্রিয়াবাচক শব্দ হলো আমনা। শুরুতে আলিফ হামজা মানে এটা আদেশ মূলক ক্রিয়া।

ওয়া ইত্তাখিজু:
এবং আদেশ দিয়েছি গ্রহণ করার। এখানেও শুরুতে আলিফ হামজা আছে যা তাখিহু: এর জন্য আদেশ মূলক ক্রিয়া। তাখিজু মানে গ্রহণ করা (২ঃ২৬৭, ৫১ঃ১৬, ২ঃ৬৩)

মিন মাকামি ইব্রাহিমা মুসাল্লানঃ
ইব্রাহিমের প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্য/উদ্দেশ্য/আদর্শ থেকে অনুসরণ যোগ্য/অনুসরণীয় বিষয়।

মাক্বাম শব্দটা আক্বিম থেকে আসছে। আর মুসাল্লান হলো মুসাল্লি থেকে আসছে।

বাকি অংশঃ
“এবং আমরা ইব্রাহিম ও ইসমাইলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছি যে তারা আমার এ রূপরেখা সমূহ (বায়তিয়া) পরিশুদ্ধ রাখবে (তাহিরা) তাওয়াফকারীদের জন্য, এবং আক্বিফকারীদের জন্য এবং রুক্কায়ি ও সুজুদিদের জন্য।”

তাওয়াফিনাঃ
অনুসন্ধিৎসু/উৎসুক

আক্বিফুনাঃ
একাগ্রচিত্তে ধ্যানকারী/গভীর চিন্তাবিদ

রুক্কায়িঃ
বিনয়ীগণ/বিনয়ের সাথে অবনতগণ

সুজুদিঃ
মান্যকারী

২ঃ১২৫ এ পুরো অনুবাদঃ

“এবং যখন আমরা মানুষের জন্য পুরষ্কারময় রূপরেখা নির্ধারণ করেছি এবং তা বিশ্বাসের নির্দেশ দিয়েছি এবং ইব্রাহিমের প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্য/আদর্শ থেকে অনুসরণ যোগ্য/অনুসরণীয় বিষয় গ্রহণ করার আদেশ দিয়েছি এবং তখন আমরা ইব্রাহিম ও ইসমাইলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছি যে তারা যেন আমার এ রূপরেখা সমূহ পরিশুদ্ধ রাখে অনুসন্ধিৎসুদের জন্য এবং গভীর চিন্তাবিদদের জন্য এবং বিনয়ীদের জন্য ও মান্যকারীদের জন্য।”

মানুষের জন্য পুরষ্কারময় রূপরেখাটা হলো আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি ঈমান ও আমিলু সালিহা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *