প্রচলিত>কুরবানী>সম্পর্কে>কোরআন>কি>বলে?

কোরআনে প্রচলিত কুরবানির নামে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে আনন্দ-উল্লাস করার নিয়ম পদ্ধতি কোথাও পাইনি,

যেমন কুরবানীর মূল হচ্ছে ( قرب ) পাওয়া গেছে ৯৬ বার, যার বেশিরভাগ অর্থ করা হয়েছে (নৈকট্য) আরো কিছু অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে যেমন- সান্নিধ্য, আত্মীয়-স্বজন, আসন্ন, কাছে আসা, নিয়ে আসা, ইত্যাদি। হয়তো অনেকেই বলবেন পশু জবাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের কথা বলা হয়েছে, হ্যাঁ কুরবানির অর্থ নৈকট্য লাভ করা ঠিক কিন্তু তার মানে এই নয় যে সেটা শুধুই নির্দিষ্ট পশুকে বোঝানো হয়েছে, বরং সেটা হতে পারে আমাদের জীবনের প্রত্যেকটা ভালো কাজ, যা আমরা আমাদের জীবনের জানমাল দ্বারা করে থাকি।

তবে অনেকেই কোরআনের বিকৃতি অর্থ অনুবাদ দ্বারা প্রচলিত নিয়মে কুরবানির দলিল পেশ করে থাকে, যেমন- ৫:২৭ বলা হয়েছে, পাঠ করো তাদের কাছে যথাযথভাবে আদমের দুই সন্তানের সংবাদ যখন তারা পেশ করল কুরবানি, অথচ এই আয়াতে ( قَرَّبَا কাররাবা ) অর্থ করা হয়েছে (তারা পেশ করল) এবং ( قُرۡبَانًا কুরবানা ) অর্থ কুরবানি ব্যবহার করা হয়েছে! অথচ ৪৬;২৮ (قُرۡبَانًا) এর অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে (নৈকট্যের মাধ্যম) কিন্তু উভয় শব্দের মূল হচ্ছে ( قرب ) ।

তবে ২:১৯৭ আয়াতে যে কুরবানির কথা বলা হয়েছে তা মূলত হজ্বের সাথে সংযুক্ত বিশেষ কারণে, এছাড়াও এই আয়াতে কুরবানি শব্দটা নেই আছে ( ٱلۡهَدۡىِۖ আলহাদ’ই) যার মূল হচ্ছে ( هدى হাদাই ) যার অর্থ পথ, অথচ প্রচলিত অনুবাদে এর অর্থ করা হয়েছে কুরবানি, অথচ কুরবানি একটা আলাদা আরবি ওয়ার্ড,এছাড়াও ৬:১৬২ আয়াতে ( وَنُسُكِى নুসুকি) শব্দের অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে কোরবানি!

এছাড়া অনেকেই ২:৬৭—৭৩ আয়াত দিয়ে প্রচলিত কুরবানির নিয়ম পদ্ধতির রেফারেন্স পেশ করে থাকে, যদিও এখানে কুরবানি শব্দটা নেই আছে( تَذۡبَحُواْ بَقَرَةًۖ) যার অর্থ পশু জবাই করা, তবে প্রচলিত কুরবানির সাথে এই পশু জবাইয়ের কোন সম্পর্ক দেখিনা, যেমন ২:৭৩ আয়াতে বিষয়টা ক্লিয়ার ।

তাছাড়া অনেকেই ৩৭:১০৭-১০৮ আয়াত দ্বারা কুরবানী রেফারেন্স পেশ করে থাকে যেমন- ৩৭:১০৮ বলা হয়েছে ( وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِ فِى ٱلۡأٓخِرِينَ ) এবং সুখ্যাত রেখেছি তার সম্বন্ধে পরবর্তীদের মধ্যে, যেহেতু আগের আয়াতে বলা হয়েছে পশু জবাইয়ের কথা তাই তারা এই আয়াত দ্বারা কুরবানীর বিধান দিয়ে থাকে, অথচ ৩৭:১০৮ পালনীয় অথবা করণীয় কোনো বিষয় নয় বরং স্মরণীয়, যেমন- ৩৭:৭৬-৭৭ বলা হয়েছে নবী নূহ এবং তার পরিবারকে আল্লাহ মহা বিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলেন, এবং তার বংশধরকেই তিনি অবশিষ্ট রেখেছিলেন, এর পরেই ওই একই শব্দ ব্যবহার করলেন ৩৭:৭৮ ( وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِ فِى ٱلۡأٓخِرِينَ ) এছাড়াও ৩৭:১২৯ ইলিয়াস এর ক্ষেত্রেও ওই একই শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা হচ্ছে মানুষের জন্য স্মরণীয় কিন্তু পালনীয় অথবা করণীয় কোনো বিষয় নয় , তার পরেও যারা ৩৭:১০৮ আয়াত দিয়ে কুরবানি করার রেফারেন্স দিয়ে থাকেন তারা ৩৭:৭৮-১২৯ কিভাবে পালন করবে?

অতএব কোরআনে কোথাও প্রচলিত এই কুরবানির নিয়ম পদ্ধতি পাওয়া যায়নি তাই এটা জ্ঞানীদের জন্য করণীয় নয় বরং যদিও কেউ পালন করে থাকি তবে বর্জনীয় বিষয়।

চলবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *